হালদার পাড়ে রেণু ফোটানোর উৎসব বৃষ্টিতে ম্লান

হাটহাজারী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২১ জুন, ২০২২ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে তৃতীয় দফায় ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ও শুক্রবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত এ সব ডিম সংগ্রহ করে আহরণকারীরা। সংগৃহীত ডিম থেকে এখন রেণু ফোটানোর উৎসব চলছে হালদার দুই পাড়ে। কিন্তু উৎসবের এই সময় প্রবল বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের ফলে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা। আর বন্যার কারণে ডিম আহরণকারীদের উৎসব ম্লান হয়ে যাচ্ছে। ডিম থেকে রেণু ফোটানোর হ্যাচারিতে যাতায়াতের রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ক্রেতা সংকটের আশংকায় ভোগছে ডিম আহরণকারীরা। আর ক্রেতা না পেলে হালদা নদী থেকে কষ্ট করে সংগৃহীত ডিম বিক্রি শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে ডিম আহরণকারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ মে হালদা নদীতে মা মাছ প্রথম দফা ডিম ছাড়ে। মাঝখানে আবার সামান্য পরিমাণ ডিম ছাড়ে মাছ। পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এবং শুক্রবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ডিম ছাড়ে মাছ। ডিম আহরণকারীরা সংগ্রহের পর ডিম থেকে রেণু ফোটানোর কাজ শুরু করে। ৪/৫ দিন পর ডিম থেকে ফোটানো রেণু বিক্রি শুরু হয়। সেই হিসাবে কাল বুধবার থেকে রেণু বিক্রি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান ডিম আহরণকারীরা।

এবার প্রথম দফায় স্বল্প পরিমাণ ডিম সংগ্রহ হওয়ায় রেণুর দাম ভালো ছিল। গত ২১ মে প্রতি কেজি রেণু বিক্রি হয়ছিল হ্যাচারি ভেদে ১ লাখ ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তৃতীয় দফায় গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সংগৃহীত ডিম থেকে ফোটানো রেণুর ভালো দাম পাওয়া প্রত্যাশা ছিল উৎপাদনকারীদের। কিন্ত হঠাৎ প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে হাটহাজারী বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। এতে হ্যাচারি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মাছুয়াঘোনার ডিম সংগ্রহকারী মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, তৃতীয় দফায় সংগৃহীত ডিম থেকে উৎপাদিত রেণু বিক্রি করে কিছুটা আয়ের আশা করেছিলাম। হঠাৎ প্রবল বর্ষণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাই রেণু ক্রেতারা হ্যাচারি আসতে পারবে না। এছাড়া রেণু রাখার জন্য তৈরি করা পুকুরও বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। তাই রেণু নিয়ে সীমাহীন বেকায়দায় পড়েছি।

হাটহাজারী উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পীযূষ প্রভাকর বলেন, ভারী বর্ষণ হচ্ছে। যদি মাটির কুয়াগুলোতে অতিরিক্ত পানি ঢুকে যায় ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো মাটির কুয়ায় পানি ঢুকেনি। ডিম থেকে রেণু উৎপাদন কার্যক্রম চলছে।

হালদা গবেষক অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, মাটির কুয়ায় রেণু ফোটানোর কাজ চলছে। ডিম থেকে রেণু ফুটছে, তবে এখনো পরিপূর্ণ নয়। আগামী ২৩ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আরও একটি জো আছে। সেটি শেষ জো। পঞ্চম জোতে ছাড়া ডিম পূর্ণাঙ্গ ডিম হয়ে থাকলে সামনের জোতে ডিম ছাড়বে না মা মাছ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়ি ঢলে রাউজানের নিচু এলাকায় হাঁটু পানি
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধস বিধ্বস্ত ৩০ বসতঘর নারী আহত