মীরসরাইয়ে বলাৎকারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক আটক

মীরসরাই প্রতিনিধি | রবিবার , ২৬ মে, ২০২৪ at ৮:৪৬ অপরাহ্ণ

মাদরাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে মীরসরাইয়ে এক শিক্ষককে আটক করেছে মীরসরাই থানা পুলিশ।

রবিবার (২৬ মে) সকালে উপজেলার ওয়্যারলেসে অবস্থিত দারুল উলুম মাদরাসা থেকে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়। আটককৃত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা জোবায়ের চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা।

সরেজমিনে জানা যায়, শনিবার (২৫ মে) রাতে ওয়্যারলেস দারুল উলুম মাদরাসার শিক্ষক জোবায়ের হেফজ বিভাগের এক শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন। রবিবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা বিষয়টি ক্যান্টিনে জানায়। 

পরবর্তীতে যৌন নিপীড়নের শিকার ওই শিক্ষার্থী ক্যান্টিনে এসে পরিবারকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। এরই মধ্যে ঘটনাটি স্থানীয়রা জানার পর মাদরাসার শিক্ষকদের বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে যায়। এই নিয়ে স্থানীয় এবং মাদরাসার শিক্ষকদের মধ্যে বাগ-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এতে মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহীম, স্থানীয় তরুণ তানভীর শাহরিয়ার রিয়াজ ও নুরনবী বশর আহত হয়। আহতরা উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে (মস্তাননগর হাসপাতালে) চিকিৎসা নিয়েছেন। 

খবর পেয়ে মীরসরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক জোবায়ের আটক করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসে।

স্থানীয় নিয়াজ মাহমুদ জানায়, মাদরাসার এক শিক্ষার্থীকে বলাৎকার বিষয়টি জানার পর আমি মাদরাসার ভিতরে গিয়ে হুজুরদের কাছে জানতে চাই। তখন মাদরাসার শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়।

নিয়াজ আরও জানায়, ওয়্যারলেস দারুল উলুম মাদরাসায় বলাৎকার ঘটনা আজ নতুন নয়। এর আগে বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। যতবারই ঘটে ততবারই মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব গোপনে বিষয়গুলো ধামাচাপা দিয়ে দেয় এবং অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোন বিচার না করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলাৎকার শিকার শিশু শিক্ষার্থীর বড় ভাই জানায়, ২০১৬ সালে আমার ছোট ভাইকে ওয়্যারলেস দারুল উলুম নূরানী বিভাগে ভর্তি করাই। নূরানী বিভাগ থেকে হিফজ বিভাগে যাওয়ার পর এখন নাজেরা বিভাগে পাঠদান চলছে। এতবছর তার কোন সমস্যা শুনি নাই। হঠাৎ করে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমার ভাইয়ের সাথে ঘটবে কখনও চিন্তা করি নাই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব বলেন, ‘দোষীতো প্রতিষ্ঠান না, দোষী একজন ব্যক্তি। অভিযুক্ত বাঁশখালী হুজুরকে পুলিশ নিয়ে গেছে। সে যদি প্রকৃত অন্যায়কারী হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মীরসরাই থানার অফিসার ইনর্চাজ সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এই ঘটনায় বলাৎকার শিকার শিশু শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্ধ হলো বঙ্গবন্ধু টানেল
পরবর্তী নিবন্ধউপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল