বড়বোনের একদিন পর মারা গেল ছোটবোনও

রাহাত্তারপুলে রান্নাঘরে বিস্ফোরণ

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুলে রান্নাঘরে গ্যাসের আগুনে দগ্ধ সামিয়া খালেদ শ্রাবণীও (১৮) মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর একদিন
আগে রোববার সকালে একই ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তার বড়বোন সাবরিনা খালেদ এ্যানি (২৩)।
গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুলের সাত তলা বিশিষ্ট বিসমিল্লাহ টাওয়ারের পঞ্চম তলায় রান্নাঘরে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় তারা দুবোন একসাথে দগ্ধ হয়। ওইদিন তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও পরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া দুইবোন চন্দনাইশ উপজেলার জোয়ারা ইউনিয়নের ফতেহনগর ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন খালেদের মেয়ে। দুবোনের মধ্যে সাবরিনা খালেদ এ্যানি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন এবং সামিয়া খালেদ শ্রাবণী নগরীর হাজী মহসিন কলেজে এইচএসসি ২য় বর্ষে অধ্যয়ণরত ছিলো। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে সাবরিনা ও সামিয়া পড়ালেখা শেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারের হাল ধরতে চেয়েছিল।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, ঘরে জমে থাকা গ্যাস থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। প্রতিবেশী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুবোন এ বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন।
নিহত সাবরিনা ও সামিয়ার চাচাতো বোনের স্বামী খুরশিদ উল আলম খোকন বলেন, মুলত গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে তারা দগ্ধ হননি। ওই বাসায় লাইনের গ্যাস থেকে দুবোন দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই সাবরিনা ও সামিয়া লাইনে গ্যাসের প্রেসার কম পাওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে বাড়ির দারোয়ানকে বলার পরও এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস লাইন লিক হয়ে গ্যাস বেরিয়ে রুমে জমা হয়েছিল। ঘটনার দিন গ্যাসের চুলাতে আগুন দিতে গিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং তারা দগ্ধ হয়।
চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিবলী বলেন, সম্পর্কে সাবরিনা ও সামিয়া আমার চাচাতো বোন। তারা দুবোন খুবই মেধাবী ছিলো। তাদের পিতা আলাহউদ্দিন খালেদ বড় স্বপ্ন নিয়ে মেয়েদের পড়ালেখা করাচ্ছিলেন। অত্যন্ত সম্ভাবনামীয় দুবোন পড়ালেখা শেষে সরকারি চাকুরী করে জীবনকে সাজাতে চেয়েছিল এবং পরিবারের হাল ধরার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে ছিলো। তাদের অকাল মৃত্যুতে সে স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। অত্যন্ত কষ্ট করে, টিউশনি করে বড়বোন সাবরিনা ইংলিশে অনার্স-মাস্টার্স পাশ করেন। ছোটবোন সামিয়াও নগরীর হাজি মহসিন কলেজে এইচএসসি ২য় বর্ষে পড়ছে। তাদের মৃত্যুতে পরিবারের পাশাপাশি এলাকায় শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাগরিয়ায় সে রাতে কী ঘটেছিল
পরবর্তী নিবন্ধএক বছরে এক কোটি ডোজ টিকা চট্টগ্রামে