এক বছরে এক কোটি ডোজ টিকা চট্টগ্রামে

প্রথম ডোজ পেয়েছে ৫৪ লাখ ৩৪ লাখ টিকা গ্রহীতা ২য় ডোজের আওতায়

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে (মহানগর ও উপজেলায়) আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয় ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে বহুল প্রতিক্ষার করোনা টিকার যুগে প্রবেশ করে চট্টগ্রাম। টিকাদান শুরুর পর গত এক বছরে এক কোটিরও বেশি (১ কোটি ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৬৪) ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে
চট্টগ্রামে। এর মাঝে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৫৪ লাখ ২৭ হাজার ৪০৫ জন। আর দুই ডোজের আওতায় এসেছেন ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৭ জন। এছাড়া প্রায় দেড় লাখ টিকা গ্রহীতা এরইমধ্যে বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ পেয়েছেন। এর বাইরে বিশেষ ক্যাম্পেইনে ১ম ও ২য় ডোজ মিলিয়ে আরো ১৬ লাখ ৫৫ হাজার ৭১০ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে মহানগর ও উপজেলায়। সবমিলিয়ে এক বছরে এক কোটির বেশি ডোজ টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে গতকাল সোমবার প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, জেলায় প্রথম ডোজ প্রাপ্ত ৫৪ লাখ ২৭ হাজার ৪০৫ জনের মধ্যে উপজেলায় পেয়েছেন ৩৩ লাখ ২২ হাজার ৯৩৩ জন। বাকি ২১ লাখ ৪ হাজার ৪৭২ জন সিটি কর্পোরেশন এলাকার।
দুই ডোজ প্রাপ্ত ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৭ জনের মধ্যে উপজেলার বাসিন্দা ১৯ লাখ ৭১ হাজার ৭৭ জন। আর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দুই ডোজ পেয়েছেন ১৫ লাখ ২ হাজার ৬৬০ জন। অন্যদিকে, বুস্টার ডোজ পাওয়া প্রায় দেড় লাখ টিকা গ্রহীতার মাঝে উপজেলায় পেয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার। তবে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ এরইমধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য শিক্ষার্থীদের এ পর্যন্ত ৯ লাখের বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে জানিয়ে সুজন বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের ৮ লাখ ৮৪ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ৫০ হাজার ৫১৬ জন।
নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান চলমান রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
চার লক্ষাধিক ডোজ টিকা চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রে : ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কেন্দ্রেই করোনার টিকাদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। শুরুর পর গত এক বছরে চার লক্ষাধিক (৪ লাখ ২১ হাজার ৬১৩) ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এ কেন্দ্রে। চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই কেন্দ্রে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৮ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬৩ জনকে। এর বাইরে ২৩ হাজার ৬৫২ জন পেয়েছেন তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ। সবমিলিয়ে এক বছরে চার লাখের বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এ কেন্দ্রে।
শুরু হওয়া টিকাদান কার্যক্রম সুচারুভাবে চলছে জানিয়ে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, এখন দৈনিক দুই হাজারের বেশি মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে।
সাড়ে ৫ লাখের বেশি টিকা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল : চমেক হাসপাতালের পাশাপাশি একই দিন (২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি) টিকাদান শুরু হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও। শুরুর পর গত এক বছরে সবমিলিয়ে ৫ লাখ ৬৮ হাজার ২৭ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এ হাসপাতালে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি আজাদীকে বলেন, এক বছরে প্রায় ৩ লাখ (২ লাখ ৯৭ হাজার ১৮৭ জন) মানুষকে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৪৯ জন। আর ১৪ হাজার ৩৯১ টিকা গ্রহীতা বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। সবমিলিয়ে সাড়ে ৫ লাখের বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে আমাদের (জেনারেল হাসপাতাল) কেন্দ্রে।
উল্লেখ্য, কোভিশিল্ড দিয়ে করোনার টিকাদান শুরু হয় চট্টগ্রামে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের টিকা দেয়া হয়। বর্তমানে সবকয়টি টিকার প্রয়োগ চলমান রয়েছে চট্টগ্রামে। যদিও ফাইজার দেয়া হচ্ছে কেবল শিক্ষার্থীদের। আর বুস্টার ডোজ হিসেবে দেয়া হচ্ছে মডার্নার টিকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবড়বোনের একদিন পর মারা গেল ছোটবোনও
পরবর্তী নিবন্ধবন্ধুর মোবাইল কেড়ে নিতে নৃশংসতা