প্রতারণা মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই বছরের কারাদণ্ড

| মঙ্গলবার , ২১ মার্চ, ২০২৩ at ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনকে প্রতারণার দায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন গতকাল সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। হেলেনা জাহাঙ্গীর ছাড়া দণ্ডিত অন্যরা হলেনজয়যাত্রা আইপিটিভির জেনারেল ম্যানেজার হাজেরা খাতুন, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ, কোঅর্ডিনেটর সানাউল্ল্যাহ নূরী ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজ শাহরিয়ার। রায় ঘোষণার সময় হেলেনা ও হাজেরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তার জন্য আইনজীবী আ. রউফ সময় আবেদন করলে তা নাকচ করে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৪ মার্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক তোফাজ্জল হোসেন। খবর বিডিনিউজের।

২০২১ সালের ২ অগাস্ট রাতে সাংবাদিক আব্দুর রহমান তুহিন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় প্রতারণার এ মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় বলা হয়, জয়যাত্রা টিভির স্থানীয় সংবাদদাতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ভোলা জেলার আবদুর রহমান তুহিনের কাছ থেকে ৫৪ হাজার টাকা নেন হেলেনা। প্রতিবেদক হিসেবে রহমান কয়েক মাস কাজ করলেও কোনো বেতন পাননি। তার কাছ থেকে উল্টো প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা নিত টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হেলানা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইড) পরিদর্শক শাহিনুর ইসলাম। এরপর ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল আদালত দণ্ডবিধির ৪২০/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান জানিয়েছিলেন, এ মামলায় মোট ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার এবং জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন। নিজেকে তিনি আইপিটিভি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিতেন। হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগেরও উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন তিনি। ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি ‘ভূইফোঁড়’ সংগঠনে হেলেনা জাহাঙ্গীরের সভাপতি হওয়ার খবর চাউর হলে ২০২১ সালের জুলাই মাসে তাকে দুই কমিটি থেকেই বাদ দেয় আওয়ামী লীগ। এরপর ওই বছর ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে বিদেশি মদ, ক্যাঙ্গারু ও হরিণের চামড়া, বিদেশি মুদ্রা, ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া (ক্যাসিনো) খেলার চিপস জব্দ করা হয়। সেই রাতে মিরপুরে জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়েও অভিযান চালায় র‌্যাব। বিটিআরসির সহযোগিতায় অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয় সেই অভিযানে।

পরে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। সেসব মামলায় তাকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে পুলিশ। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পান হেলেনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসময়সীমা শেষ, সরেনি অবৈধ স্থাপনার অধিকাংশ
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথম দিনে আ. লীগের মনোনয়ন ফরম নিলেন ছালামসহ ১৩ জন