পোকা মারার সেই ওষুধ বাসাবাড়ির জন্য নয়

বিষক্রিয়া : পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডি রিমান্ডে

| শুক্রবার , ৯ জুন, ২০২৩ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় পোকা মারার ওষুধ প্রয়োগের পর বিষক্রিয়ায় স্কুলপড়ুয়া দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুজন হলেন ডিসিএস অরগানাইজেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান এবং এমডি ফরহাদুল আমিন। টাঙ্গাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রণপ কুমার ভক্ত জানান, দুই আসামিকে এ দিন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই রফিকুল ইসলাম। খবর বিডিনিউজের।

অন্যদিকে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন আসামিদের আইনজীবী হাসনাইন তালুকদার সুজন। তিনি বলেন, ‘এ প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের দায় এ ঘটনায় থাকবে কেন? তারা তো এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন না। তারা কিভাবে আসামি হয়?’ গ্রেপ্তারদের বক্তব্য আছে কি না তা বিচারক জানতে চাইলে তারা নিরুত্তর থাকেন। এরপর বিচারক তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান।

বসুন্ধরার আই ব্লকে নতুন বাসার পোকামাকড় তাড়ানোর জন্য বারিধারার ‘ডিসিএস অরগানাইজেশন লিমিটেড’ পেস্ট কন্ট্রোল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন। ওই কোম্পানির কর্মীরা ২ জুন বাসায় বালাইনাশক দিয়ে যায়। বাসায় ওঠার পর ওই পরিবারের সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৪ জুন সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মোবারক হোসেনের ৯ বছর বয়সী ছেলে শাহিল মোবারত জায়ান। পরে রাতে মারা যায় তার ভাই ১৫ বছর বয়সী শায়েন মোবারত জাহিন। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা করেন দুই শিশুর বাবা মোবারক হোসেন। সেই মামলায় ৫ জুন রাতে ডিসিএসকর্মী টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওই পেস্টিসাইড বড় গার্মেন্টস ও বীজ গুদাম বা অনাবাসিক জায়গায় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু ঘরবাড়িতে এ জাতীয় বিষাক্ত আইটেম ব্যবহার করা যায় না।’ ডিবি কর্মকর্তা হারুন এও বলেন, ‘ঘরবাড়িতে এগুলো ব্যবহার করলেও ব্যবহৃত সেই আবাসস্থল ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়। পরে আবার ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখতে হয় বিষাক্ত গ্যাস বের করার জন্য।’

প্রাণঘাতী এই বালাইনাশক ব্যবহারের অনুমোদন ছিল কিনা, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে হারুন বলেন, ‘এই বিষাক্ত আইটেম কোথা থেকে কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, রাসায়নিক অনুপাত সঠিক ছিল কি না, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর, এ বিষয়গুলোকে যাচাইবাছাই করা হবে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধকায়েস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধসালাহ উদ্দিন এখন দেশে ফিরতে বাধা নেই : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়