চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ে কাল ঢাকায় বৈঠক

স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর সভাপতিত্বে উপসি'ত থাকবেন তথ্যমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চসিক মেয়র

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৩০ জুলাই, ২০২২ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে তিন সংস’ার ১০ হাজার ৯২১ কোটি ২২ লাখ টাকার চারটি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলো ধাপে ধাপে একনেকে অনুমোদন পেয়েছে ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়ে। অনুমোদনের দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন থেকে আট বছর পার হলেও প্রকল্পগুলোর একটিরও কাজ শেষ হয়নি। এদিকে অল্প বৃষ্টি হলেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় নগরে। এমনকি জোয়ারেও তলিয়ে যায় নিচু এলাকা।
এই অবস’ায় নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনায় সভা আহ্বান করছে স’ানীয় সরকার, পল্লী, উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ওই সভার কার্যপত্র প্রস’ত করা হয়েছে। সেখানে আটটি আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়। আগামীকাল রোববার রাজধানীতে স’ানীয় সরকার বিভাগে অনুষ্ঠেয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন স’ানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ছাড়াও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের উপসি’ত থাকার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, জলাবদ্ধতার বিষয়ে সব সংস’াকে ডেকেছিলাম। জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে একটি কমিটিও করে দিই। তারা কিছু সুপারিশ করে। এর পেক্ষিতে খাল-নালা পরিষ্কারে ক্রাশ প্রোগ্রাম করি। এর কিছু সুফল পেয়েছি। পানি উঠলেও দ্রুত নেমে গেছে।
আগামীকালের সভায় কোনো প্রস্তাব দিবেন কীনা জানতে চাইলে মেয়র বলেন, মেগা প্রকল্পের আওতাভুক্ত খাল থেকে যে পরিমাণ মাটি উত্তোলন করার কথা সে পরিমাণ হয়নি। শুধু গার্ড ওয়াল দিলে তো হবে না। মাটি তুলতে হবে। এবার বর্ষা তো মোটামুটির শেষের পথে। আগামী বর্ষার আগে যেন খাল থেকে মাটি তুলে একদম পরিষ্কার করে ফেলে সে বিষয়টি জানাব। কারণ খাল পরিষ্কার না থাকলে পানি তো যেতে পারবে না।
মেয়র বলেন, মেগা প্রকল্পের ওদের বার বার বলেছি স’ানীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য। সমন্বয় করলে অনেক সুবিধা। কিন’ সেভাবে হয় না।
চার প্রকল্পের বর্তমান অবস’া : ২০১৪ সালের ২৪ জুন ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় অনুমোদন হয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বহাদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল নতুন খাল খনন প্রকল্প। তিন দফা সংশোধনের বর্তমানে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দ
দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়। প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৫টি এল.এ মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে ১০ দশমিক ৭৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে চসিক। অধিগ্রহণকৃত জায়গায় কাজ চলছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকল্প আছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল দুই হাজার ৩১০ কোটি ২৪ লাখ ২০ টাকায় ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৬২ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় ১২টি স্লইস গেট বসানোর কথা। এর মধ্যে ১০ টির নির্মাণ কাজ চলমান আছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করার কথা। কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৭ কিলোমিটার।
জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ’র মেগা প্রকল্প অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট। পাঁচ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সমপ্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৭১ দশমিক ২ শতাংশ। সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, চারটি রেগুলেটর চালু করেছি। ১২টি সিল্ট ট্রাপ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ১০ দশমিক ৭ কিলোমিটারনতুন ড্রেইন নির্মাণ করেছি।
এছাড়া ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন পায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা বা জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন’ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় ২ দশমিকব ৭ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল, ৬৯টি পাম্পসহ ২৩টি স্লুইস গেট নির্মাণ করা কথা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি এখন মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র আশুরা ৯ আগস্ট