ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কলেও নেই সাড়া

চসিক কল সেন্টার ।। কারিগরি প্রতিষ্ঠানের কাছে চাওয়া হয়েছে কৈফিয়ত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ

কল করে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকলেও কেউ সাড়া দেয় না। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কল সেন্টারকে ঘিরে এমন অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে করেছেন সাধারণ লোকজন। বিষয়টা তেমন আমলে নেয়নি সংস্থাটি। তবে এবার ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা। চসিকের প্রধান নির্বাহী এবং সচিবসহ একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কলেও কেউ সাড়া দেয়নি। তাই কল সেন্টার পরিচালনায় কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে গতকাল রোববার কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরবাসীর নাগরিক সেবা দ্রুততর করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল কল সেন্টার চালু করে সংস্থাটি। কল সেন্টারের হান্টিং নম্বর (শর্ট কোড) ১৬১০৪। হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশন নামে একটি ফার্ম এই কল সেন্টার পরিচালনায় টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছে। সংস্থাটির সাথে চসিকের হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত যেকোনো মুঠোফোন থেকে ডায়াল করে নাগরিক সেবা সংক্রান্ত তথ্য, অভিযোগ বা পরামর্শ দিতে পারবেন।
উদ্বোধনের সময় চসিকের পক্ষে বলা হয়েছিল, কল সেন্টারে পাওয়া নগরবাসীর অভিযোগগুলো যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সমাধানের ব্যবস্থা করবে চসিক। অভিযোগের নিষ্পত্তি পূর্ব নির্ধারিত সময়ে না হলে বিষয়টি কল সেন্টার থেকে মেয়রকে সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হবে।
অথচ বিভিন্ন সময়ে নগরবাসী অভিযোগ করেছেন, কল সেন্টারে অভিযোগ দিলেও তার সমাধান হয় না। এছাড়া কল করে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলেও কেউ রিসিভ করে না। এই কল সেন্টারে ময়লা-আর্বজনা, মশার উপদ্রব বৃদ্ধি, ভাঙা রাস্তাঘাট নিয়েই অভিযোগ বেশি আসে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গত ১১ অক্টোবর চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিবসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একাধিকবার কল করেন কল সেন্টারের নম্বরে। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও কোনো সাড়া পাননি তারা। বিষয়টি উল্লেখ করে গতকাল হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাহ উদ্দীনের কাছে কৈফিয়ত চেয়ে নোটিশ দিয়েছেন চসিকের সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী।
এতে বলা হয়, নাগরিকগণও একই ধরনের অভিযোগ কর্পোরেশনের ফেসবুক পেইজ এবং কর্পোরেশনের বিভিন্ন কর্মকর্তার নিকট মোবাইলে বা ফোনের মাধ্যমে করেছেন। এতে আর্থিক ক্ষতিসহ সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশনের বিরুদ্ধে কেন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ জবাব দিতে বলা হয় নোটিশে।
নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৮ মে-ও হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশন থেকে একই অভিযোগে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছিল। তখন পরবর্তীতে এমন কর্মকাণ্ডে সতর্ক থাকবে মর্মে অঙ্গীকার করলেও তা রক্ষা করেনি।
হ্যালো ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজবাহ উদ্দীন আজাদীকে বলেন, আমরা আগামীকাল (আজ) কর্পোরেশনে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরব। এখানে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য, সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আমরা সার্ভিস দেব। এরপর কেউ কল করলেও সাড়া মিলবে না। এছাড়া শুধু মোবাইল অপারেটর থেকে কল করা যাবে। টিঅ্যান্ডটি থেকে কল দিলে পাবে না। তাছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সাথে চুক্তি অনুযায়ী দুজন অপারেটর কাজ করে। এখন এ দুই অপারেটর যখন কল রিসিভ করে কথা বলে তখন অন্য কেউ কল দিলে তো ওয়েটিংয়ে থাকবে। এসব কারণে সমস্যা হয়েছে বলে ধারণা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় সংঘর্ষ গুলিতে আহত ১৫
পরবর্তী নিবন্ধগার্মেন্টস কারখানায় সন্ত্রাসীদের হামলা