লেবাননে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনাইটেড নেশন্স ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউনিফিল) এ অংশ নিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৭৫ জন সদস্যের একটি দল গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের বিমানযোগে চট্টগ্রামস্থ শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করেছে। নৌসদস্যরা বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট (ব্যানকন–১৫)’র আওতায় নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ ‘সংগ্রাম’ এ যোগদান করবেন। বিদায়ের প্রাক্কালে চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের চিফ স্টাফ অফিসার টু কমান্ডার নৌসদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান। এ সময় নৌবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।
চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগামী নৌসদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানান এবং নৌসদস্যদের উদ্দেশ্যে সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাগত দক্ষতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তথা দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করতে সকল নৌসদস্যদের একযোগে কাজ করার দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর প্রথম গ্রুপে ৩৫ জন নৌসদস্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ইউনাইটেড নেশন্স ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (ইউনিফিল) অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে ব্যানকন–১৪ এর নৌসদস্যরা আগামী ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন। উল্লেখ্য, ২০১০ সাল হতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ভূ–মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে।
বর্তমানে নিয়োজিত নৌবাহিনী যুদ্ধ জাহাজ ‘সংগ্রাম’ লেবাননের ভূ–খণ্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সাথে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি উক্ত জাহাজ লেবানীজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের উপর নজরদারী, দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবাননের সামরিক সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ লেবাননে বসবাসরত বাংলাদেশিদের নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। লেবাননে মোতায়েনের পর থেকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের নৌসদস্যরা অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন করে চলেছে। এই গর্বিত অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।