হাটহাজারীতে অসহায় বৃদ্ধের পাশে ইউএনও

হাটহাজারী প্রতিনিধি | বুধবার , ২১ এপ্রিল, ২০২১ at ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ

একসময় সবকিছু ছিল রনজিতের। স্ত্রী, পুত্র, কন্যা নিয়ে ছিল সুখের সাজানো সংসার। স্ত্রী রেখা রানী চৌধুরী পাড়ার ছেলে-মেয়েদের পড়াত। ছেলে বাসু চৌধুরী পল্লী চিকিৎসক হিসেবে আশপাশের গ্রামে চিকিৎসাসেবা দিতেন। মেয়েকে এসএসসি পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছিলেন সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে। পেশায় রং মিস্ত্রি রনজিতের ঘরে অন্তত অভাব ছিলনা। হঠাৎ এক ঝড় নেমে আসে রনজিতের পরিবারে। কোন এক অজানা ব্যাধিতে রনজিতের পুত্র কন্যা দুজনই মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। পাগল প্রায় হয়ে তারা ঘুরতে থাকে পথে প্রান্তরে। ছেলে-মেয়ের এহেন দুর্ভাগ্যজনক পরিণতিতে মুষড়ে পড়েন সত্তরোর্ধ বৃদ্ধ রনজিত। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন ঘরে। তার ষাটোর্ধ বয়সের স্ত্রী মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অসুস্থ স্বামী ও মানসিক ভারসাম্যহীন দুই পুত্র কন্যার মুখে আহার তুলে দিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এহেন অবস্থায় বছরের পর বছর মেরামতের অভাবে বৃদ্ধ রনজিতের একমাত্র ঘরটি ভগ্নপ্রায় ও জরাজীর্ণ হয়ে মাটি ছুঁইছুঁই করে কোনমতে টিকে ছিল। হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের হিন্দু পাড়ায় অসহায় রনজিতের এই দূরাবস্থার খবর স্থানীয় এক সাংবাদিকের নিকট জানতে পেরে নিশ্চুপ বসে থাকতে পারেননি হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমিন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তড়িৎ নির্দেশ দেন অসহায় রনজিতকে ঘর তৈরী করে দেয়ার জন্য। ইউএনওর তত্ত্বাবধানে অসহায় বৃদ্ধ রনজিৎ এবার পাচ্ছেন নতুন বাড়ি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ঘটনা জানার পর তড়িৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করি। জরাজীর্ণ এই পরিবারের ঘরটি নির্মাণ করে দিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরকারি সহযোগিতা থেকে হতদরিদ্র কোনো পরিবার বাদ যাবে না
পরবর্তী নিবন্ধবিভিন্ন স্থানে ইফতার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ