বন্ধু পাখি

রাজিব উল হাসান | বুধবার , ২৩ জুন, ২০২১ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

নাহ্‌..রায়ান কে নিয়ে পারা যাচ্ছে না।একটু ফাঁক পেলেই কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যাবেই। গ্রীষ্মের শেষ শুরু হয়েছে বর্ষাকাল। এসময় দুপুরে খাওয়ার পরে মা, রায়ান কে ডেকে বলে, তুমি ঘুমা ও আর না ঘুমাও বাইরে বেরোবে না। হু বলে মায়ের কথায় সাড়া দিলে ও তাঁর মন পড়ে আছে পুকুর পাড়ে। আম জাম কাঁঠাল লিচু সহ পুকুর পাড়টা ভরে আছে। এসময় সব গাছে ফল পেকে সুবাস ছড়াচ্ছে। হরেক রকম পাখপাখালি আর কাঠবেড়ালির আনাগোনা রায়ান মুগ্ধ হয়ে দেখে। ওদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্য রায়ান যেন ব্যাকুল হয়ে আছে।
ও পাখি পাখি তুমি শুনতে পাচ্ছো না কেন? আমি তোমার বন্ধু হতে চাই। তুমি কি আমার বন্ধু হবে? কাঠবিড়ালি ও কাঠবিড়ালি তুমি ফল না খেলে নষ্ট করো না। কার কথা কে শুনে…এভাবেই দিন গুলো যাচ্ছে। রায়ান ও দমবার পাত্র নয়। এদিকে বেড়ে গেছে করোনার প্রকোপ। মা রায়ান কে স্বাস্থ্যবিধি ভালো করে শেখালো। রায়ান স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে টিভিতে জানতে পারলো।সে তাঁর বন্ধু মিনহাজ কে খুব করে বোঝাল ব্যাপারে। মিনহাজ রায়ানের কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো, দূর বোকা এগুলো কিছু হবেনা। রাতে ঘুমানোর সময় রায়ান মাকে বললো, মা মিনহাজ আমার কোন কথা শুনে না। সে নাকি করোনা কে ভয় পায় না। ও সারাদিন ময়লা নিয়ে খেলে। মা বলে,তুমি ওর সাথে খেলো না।
সেই থেকে রায়ান একা একাই খেলে যাচ্ছে। মনে দূঃখ নিয়ে একথা সে তাঁর পুকুর পাড়ের বন্ধুদের বোঝাল। এক দু’দিন করে কয়েকটা পাখি রায়ানের বন্ধু হয়ে তাঁর সাথে ভাব জমালো। সে মিনহাজের অভাবটা ভুলে গেল। মিনহাজ এগুলো দেখে টিপ্পনি কেটে বলে,রায়ান তোর পাখি বন্ধু কেমন আছে রে।রায়ান মিনহাজ কে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে চলতে বলে। বড়াই করে মিনহাজ বলে, তোর করোনা আমাকে ভয় করে। এই বলে সে একটা ঢিল মারে পাখিদের গায়ে। এতে রায়ান মনে কষ্ট পায়।
সকালে মায়ের ডাকে রায়ানের ঘুম ভাঙ্গে। তাড়াতাড়ি উঠো মিনহাজ কে মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছে। তোমাকে দেখার জন্য কান্না করছে। রায়ান দৌঁড়ে ঘর থেকে বের হয়ে দেখলো এম্বুলেন্সে মিনহাজ শুয়ে আছে। তাঁর শ্বাসকষ্ঠ হচ্ছে। রায়ান কে দেখে মিনহাজ কান্না করে দিল। আমি বড়াই করেছি, তোর কথা শুনিনি। আমাকে মাফ করে দিস। সাইরেন বাজিয়ে এ্যাম্বুলেন্সটা ছুটে গেল। পাখিগুলো তাঁর পিছনে ছুটে চললো। কান্নাচোখে রায়ান দাঁড়িয়ে রইলো…।
বন্ধুরা, তোমারা ও কারো সাথে বড়াই করো না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবার জন্য ভালোবাসা
পরবর্তী নিবন্ধজাদুর বাক্স