এপ্রিলে ৬ থেকে ৮ দিনের পূর্বাভাস থাকলেও বৃষ্টি হয়েছে একদিন

তীব্র গরমে নগরজীবনে অস্বস্তি চট্টগ্রামের দুয়েক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস আজ

মোরশেদ তালুকদার | শনিবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ at ৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি মাসে (এপ্রিল) চট্টগ্রামে ১৩০ থেকে ১৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা। একইসঙ্গে মাসের ৬ থেকে ৮ দিন বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও পূর্বাভাস ছিল। অথচ ২৬ দিন পার হলেও এ মাসে নগরে মাত্র একদিন বৃষ্টি হয়েছে। গত ৮ এপ্রিল হওয়া এ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ১৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার।

এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে টানা ২৭ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নগরে টানা ছয়দিন তাপপ্রবাহ ছিল। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বৃষ্টি না হলে তীব্র গরম থেকে মুক্তি মেলার সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় লোককবি আবদুল হাই মাশরেকীর ‘আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই’ এর মতই যেন গরমে অতিষ্ঠ লোকজন বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছেন। এমনকি বৃষ্টির জন্য আল্লাহর দরবারে আকুতি জানিয়ে ‘ইসতিসকার নামাজ’ আদায় হয়েছে নগরে। বৃষ্টির জন্য মানুষের এ আর্তনাদের মধ্যে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম এবং পাশ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে জানায়, অস্থায়ীভাবে দুই এক জায়গায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া এলাকার অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। অবশ্য এর আগেও কয়েকবার পতেঙ্গা আবহাওয়া এরকম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিলেও নগরে বৃষ্টিপাত হয়নি।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টার যে পূর্বাভাস দিয়েছে সেখানে সিলেট বিভাগ ছাড়া দেশের আর কোথাও বৃষ্টিপাতের কথা উল্লেখ করেনি। অর্থাৎ এ পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা নেই চট্টগ্রামে। তাহলে কী সহজে গরম থেকে মুক্তি পাবে না চট্টগ্রাবাসী।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, মে মাসের শুরুতে সিলেট এবং চট্টগ্রামে বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে সেটা হিট অ্যালার্টের ক্ষেত্রে সামান্য প্রভাব পড়তে পারে আবার নাও পড়তে পারে। হিট অ্যালার্ট সহজে নাও যেতে পারে। হিট অ্যালার্ট যাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে বাংলাদেশের পশ্চিমাংশে (ভারত) যদি ভালো পরিমাণে বৃষ্টি হয় এবং সেই বৃষ্টির প্রভাব যদি বাংলাদেশে পড়ে। বাংলাদেশে যদি ভালো পরিমাণে বৃষ্টি হয় তাহলে তাপপ্রবাহ কমে আসতে পারে।

এ আবহাওয়াবিদ জানান, বাংলাদেশের পশ্চিমে ভারতের যে অঙ্গরাজ্যগুলো আছে সেখানে হিট অ্যালার্ট জারি করা আছে। সেখানে তাপমাত্রা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি। ওই তাপমাত্রা বাংলাদেশেও কিছুটা প্রভাব ফেলছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাপপ্রবাহ হলে এর প্রভাবেও বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি জানান, অনেকদিন ধরে তাপপ্রবাহ চলতে থাকলে কোনো কোনো এলাকার বায়ুচাপ কমে যায়। এতে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প কোথাও জড়ো হতে শুরু করে এবং সেখানে বজ্রমেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এদিকে নগরবাসী জানান, তীব্র গরম তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়ও প্রভাব ফেলছে। তাই বৃষ্টি হলে গরমের অস্বস্তি থেকে কিছুটা মুক্তি মিলবে বলে আশা তাদের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআলোচনায় সাবেক ২০ ছাত্রনেতা
পরবর্তী নিবন্ধট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধের মাথা বিচ্ছিন্ন