প্রশিক্ষণ-শিখনের আনন্দে বড় হচ্ছে এতিম শিশুরা

খাগড়াছড়ি শিশু পরিবার

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | রবিবার , ৩ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর এতিম শিশুদের সমাজের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসতে কাজ করছে সরকার। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত জেলা সরকারি শিশু পরিবারে বেড়ে উঠছে প্রায় শত শিশু। তাদের সার্বিক বিকাশের জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, নাচ-গান শেখানো হয়। এছাড়া শিশুদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য দেয়া হয় সেলাইসহ বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা। শিশু পরিবারের মাধ্যমে বেড়ে উঠা এতিম ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষাসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে খাগড়াছড়ির শিশু পরিবারে ৯২ জন এতিম শিশু সরকারি নানা সহায়তা নিয়ে বেড়ে উঠছে। এতিম শিশুদের সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসতে খাগড়াছড়িতে ১৯৮৮ সালে গড়ে উঠে সরকারি শিশু পরিবার। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত এই আবাসিক প্রতিষ্ঠানে বাবা-মা হারা এতিম শিশুদের আশ্রয় দেয়া হয়। ছয় থেকে নয় বছর বয়সী এতিম শিশুদের এখানে ভর্তি করানো হয়। সম্পূর্ণ আবাসিক এই প্রতিষ্ঠানে সরকারি খরচে প্রতিটি শিশুর পোশাক, খাবার, পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়।
শিশু পরিবারের শিক্ষার্থী হেমোচাং মারমা বলেন, এখানে বাবা মারা যাওয়ার পর আমি ৬ বছর বয়সে এখানে ভর্তি হয়েছি। এখন পড়ছি নবম শ্রেণিতে। এখানে পড়ালেখার পাশাপাশি নাচ গান শেখানো হয়। অথৈচিং মারমা নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি এখানে দশ বছর ধরে আছি। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের দারিদ্র্যতার কারণে এখানে ভর্তি করিয়ে দেয়। আমি এখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। এখানে ভর্তি না হলে হয়ত আমার পড়াশোনা করা হত না। শিশু পরিবারের কারণে আমরা এত দূর আসতে পেরেছি।
এতিম শিশুদের পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও কারিগরি দক্ষতা অর্জনের জন্য রয়েছে আলাদা তত্ত্বাবধায়ক। নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিশু দক্ষ হয়ে উঠে। শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে বড় আপা ও বড় ভাইয়া। শিশু পরিবারের বড় আপা পুষ্প রানী জানান, ভবিষ্যত দক্ষতা অর্জনের জন্য মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া সকাল-বিকেল তাদের পড়াশোনার জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছে। বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করা হয়। ধীরে ধীরে তারা এখানে পুর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠে।
শিশু পরিবারের (মিশ্র) এর উপ-তত্ত্বাবধায়ক মো. নাজমুল আহসান জানান, শিশু পরিবারের বেড়ে উঠা অনেক এতিম শিশু এখন সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিষ্ঠিত। এখানে এতিম শিশুদের সার্বিক বিকাশের লক্ষে সবধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুরা যাতে সামাজের মূল স্রোতধারায় যুক্ত হচ্ছে পারে সেই বিষয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংক্রমণ ও মৃত্যু এক মাসে কমল ৮০ ভাগ
পরবর্তী নিবন্ধকদমতলীতে চসিকের উচ্ছেদে বাধা, হাতাহাতি (ভিডিও দেখুন)