দেশে প্রথমবারের মত গর্ভাবস্থায় শিশুর জিনগত ত্রুটি নির্ণয় চালু

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৫ জুন, ২০২২ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম প্রতিরোধের লক্ষ্যে মায়ের গর্ভে শিশুর কোন অস্বাভাবিকতা বা ত্রুটি থাকলে সেটা নির্ণয় করার জন্য উন্নত প্রযুক্তির একটি সফটওয়্যার চালু করেছে বাংলাদেশ শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সুইজারল্যান্ডের রোস ডায়াগনস্টিক নামে একটা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রযুক্তিগত এ সহায়তা দিচ্ছে। এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস এন্ড গাইনী বিভাগের চিকিৎসক ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, অ্যানোমালি স্ক্যানের মাধ্যমে শিশুর গঠন ঠিক আছে কিনা বা তার হাত-পা ঠিক আছে কিনা, এসব দেখা যায়। সব সময় আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে ডিএনএ বা জিনগত সমস্যা ধরা যায় না। কারণ প্রতিবন্ধী বাচ্চা যারা থাকে তাদের গঠনগত ত্রুটি নাও থাকতে পারে। তাদের থাকে মস্তিষ্কে ত্রুটি বা বুদ্ধিবৃত্তিক ত্রুটি। অর্থাৎ জেনেটিক বা ডিএনএ ঘটিত ত্রুটি। এই ডিএনএ ঘটিত ত্রুটি কিন্তু আলট্রাসনোগ্রাম করে ধরা যায় না।
চিকিৎসকরা বলছেন, মায়ের গর্ভে ভ্রূণ থাকা অবস্থায় ১১ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে এই পরীক্ষাটি করালে ভ্রূণের জিনগত কোন ত্রুটি আছে কিনা সেটার ঝুঁকি নির্ণয় করা যাবে। ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, প্রথম তিন মাসে আমরা মায়ের রক্তে দুটো হরমোন পরীক্ষা করি। আরেকটা আলট্রাসাউড করা হয় ভ্রূণের ঘাড়ের পিছন দিকে। এই তিনটা জিনিস আমরা কম্পিউটারে একটা সফটওয়্যারে দিলে, এই কম্পিউটার সফটওয়্যার একটা ঝুঁকি নির্ণয় রিপোর্ট দেয়। সেই ঝুঁকি আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য একটা ডিএনএ টেস্ট করা যায়। শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা এই গর্ভাবস্থা চালিয়ে যাবেন কিনা। যদি না চান তাহলে চিকিৎসকরা তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারেন। আর যদি গর্ভের ভ্রূণ রাখতে চান তাহলে তাকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে যে এই শিশু গর্ভেই মারা যেতে পারে বা জন্মের পর মারা যেতে পারে। অথবা প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্ম নিতে পারে।
যেসব মায়ের বয়স ৩০ বছরের বেশি, যাদের আগেই একটি ডাউন সিনড্রোমের বাচ্চা আছে তারা ঝুঁকিতে আছেন। বিশ-বছর বয়সী মায়েরা যদি গর্ভধারণ করে তাহলে দেড় হাজার মায়ের মধ্যে একজনের ডাইন সিনড্রোমের বাচ্চা হতে পারে। অপরদিকে ৩৫ বছর বয়সী কোন মা যদি গর্ভধারণ করেন তাহলে এমন ২৫০ জন মায়ের মধ্যে একজনের ডাউনসিনড্রোমের বাচ্চা হতে পারে বলে জানান চিকিৎসকরা।
জানা যায়, চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করেই এই পরীক্ষা বাংলাদেশ শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে করানো যাবে। কোন ঝুঁকি আছে কিনা সেটা জানা যাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেউলিয়া আদালতে মামলা মাত্র ১৪
পরবর্তী নিবন্ধরাউজানে ইভটিজারকে এক বছরের কারাদণ্ড