চারদিকে সাইরেনের শব্দ, আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন

ইউক্রেনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর আর্তি

| শনিবার , ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ

নিরাপদে ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আশায় রাশিয়া সীমান্ত লাগোয়া মারিওপোল থেকে কিয়েভে এসেছিলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আহমেদ ফাতেমী রুমি এবং তার চার সহপাঠী। কিন্তু তাদের অবস্থা হয়েছে ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে পড়ার মত। গতকাল শুক্রবার হোয়াটসঅ্যাপে যখন রুমির সঙ্গে কথা হচ্ছিল, আতঙ্কে চড়ে যাচ্ছিল মারিওপোল স্টেট ইউনিভার্সিটিরর এই শিক্ষার্থীর কণ্ঠ। খবর বিডিনিউজের।
একটু পরপর সাইরেন বাজছে আর আমরা ছুটে বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছি। আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন। জানি না ভাগ্যে কী আছে। এত আতঙ্কে আর থাকতে পারছি না। তাই কিয়েভ চলে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে চেষ্টা করব নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে, বলছিলেন তিনি। ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিওপোল দোনেৎস্ক অঞ্চলে অবস্থিত। ওই জেলার বেশ কিছু অংশ রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে সেই ২০১৪ সাল থেকে। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সেনাবাহিনী যেসব এলাকা দিয়ে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে দোনেৎস্ক তার একটি। সে কারণে রুমি ও তার বন্ধুরা মরিয়া হয়ে মরিওপোল ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কিয়েভ হয়ে কোনোভাবে নিরাপদ কোনো সীমান্তে চলে যাওয়া।
রুমি জানান, মারিওপোল থেকে কিয়েভের দূরত্ব প্রায় ৭৮৩ কিলোমিটার। অনেক ঘোরাঘুরির পর তারা ট্রেনের টিকেট পান। সেই ট্রেনেই শুক্রবার চার বন্ধুর সঙ্গে কিয়েভে পৌঁছান। কিন্তু কিয়েভে পৌঁছে যে পরিস্থিতি দেখলেন, সেজন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না রুমিরা। ট্রেন থেকে নেমে বুঝতে পারছিলেন না, এরপর কী করবেন। খোঁজ খবর করার চেষ্টার মধ্যেই বিকট শব্দে সাইরেন বেজে উঠে। তারপর থেকে একটু পরপরই সাইরেন বাজছে এবং লোকজনের সঙ্গে তারাও দৌড়ে বাংকারে আশ্রয় নিচ্ছেন। মারিওপোল থেকে পোল্যান্ড সীমান্তে যেতে হলে কিয়েভ হয়েই যেতে হবে। ফলে আর কোনো ভালো বিকল্প খুঁজে পাননি রুমিরা।
রুমি বলেন, এদিকে বাস, ট্রেন সব বন্ধ। কী করব বুজতেছি না। হুড়মুড়িয়ে বাংকারে ঢোকার সময় একজন আরেক জনের গায়ের উপর পড়ছে, আমরা কথা বলার অবস্থা নাই আসলে। আমাদের জন্য দোয়া করেন।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেইনের বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত যে বাংলাদেশিরা আটকে পড়েছেন, তাদের বেশিরভাগই রুমির মত শিক্ষার্থী। দেশটিতে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর হাতে পোল্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার জন্য যথেষ্ট টাকাও নেই। বাংলাদেশ থেকে সেখানে টাকা পাঠানো জটিল বলে তাদের সঙ্কট আরও বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকিয়েভ দখলের দ্বারপ্রান্তে রাশিয়া
পরবর্তী নিবন্ধযেতে হবে সীমান্তে, কিন্তু কীভাবে