কন্টেনারে করে ফাহিম কীভাবে মালয়েশিয়ায় জানে না পরিবার

| রবিবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের খালি কন্টেনারে উদ্ধার হওয়া কিশোরকে তার পরিবার ছবি দেখে শনাক্ত করেছে। পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কিশোরের প্রকৃত নাম মো. রাতুল ইসলাম ফাহিম; বয়স ১৪। সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়া ও রোকেয়া বেগম দম্পতির ছেলে। পেশায় দিনমজুর ফারুকের তিন ছেলের মধ্যে ফাহিম সবার বড়। সে কিছুটা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। দুই মাস আট দিন আগে ফাহিম বাড়ি থেকে ‘নিরুদ্দেশ’ হয় বলে জানালেও কীভাবে সে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে করে মালয়েশিয়ার পেনাং বন্দরে পৌঁছেছে সে বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা কিছুই বলতে পারছেন না। খবর বিডিনিউজের।

শনিবার বিকালে ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যরা সংবাদমাধ্যম কর্মীদের দেওয়া কয়েকটি ছবি থেকে কিশোর ফাহিমকে শনাক্ত করে। আমরাও বিষয়টি এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়েছি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে।’

মনোহরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কাছ থেকে প্রথম জেনেছি। ঘটনাটির বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওনা হয়েছিল মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘এমভি ইন্টিগ্রা’ নামের জাহাজটি, ১৭ জানুয়ারি সেটি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে পৌঁছায়। মঙ্গলবার রাতে খালি একটি কন্টেনার থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোরের কন্টেনার থেকে বেরিয়ে আসার কয়েকটি ভিডিও মালয়েশিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হয়। তাতে দেখা যায়, কিশোরটি বাংলায় কথা বলছে। সেখানে বাংলাভাষী এক ব্যক্তি তাকে নাম জিজ্ঞেস করলে, সে জানায় তার নাম ‘ফাহিম’। পরে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশে ইসমাইল বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ছেলেটি কন্টেনারে ঢোকার পর ঘুমিয়ে পড়েছিল। পরে সে এখানে এসে পৌঁছায়। সে মানবপাচার চক্রের শিকার নয়। শনিবার দুপুরে ফাহিমের বাবা দিনমজুর ফারুক মিয়া বলেন, আমরা ছবি দেখে রাতুলকে শনাক্ত করি। বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে নিখোঁজ হয় সে। প্রায়ই সে এমন ঘটনা করে; আবার ফিরেও আসে। ভেবেছিলাম নিজে নিজেই ফিরে আসবে, তাই আর থানায় জিডি করতে যাইনি। বিষয়টি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করার সামর্থও নেই জানিয়ে ফারুক মিয়া বলেন, ছোটবেলা থেকেই সে কিছুটা শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যহীন। আমার ছেলেটাকে যেভাবেই হোক যেন দেশে ফিরিয়ে আনে, সেই আবেদন সরকারের কাছে। রাতুলের মা রোকেয়া বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। দিন এনে দিন খাই। জন্মগতভাবেই আমার ছেলে প্রতিবন্ধী। সে কীভাবে চট্টগ্রাম বন্দরে গেল এবং কন্টেনারে করে মালয়েশিয়ায় গেল এ বিষয়ে কিছুই জানি না আমরা। আমি ছেলেরে ফিরে পেতে চাই। আমার ছেলেকে ফিরে পেতে প্রশাসন ও সরকারের সহযোগিতা চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাঁচ দশক আগে চাঁদে পা রাখা বাজ অলড্রিন এবার মধুচন্দ্রিমায়
পরবর্তী নিবন্ধউত্তরা মোটর্স দেশে নিয়ে এলো নতুন বাজাজ পালসার স্পোর্টস বাইক