এক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ ভাই

চকরিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় মহাসড়ক থেকে দুই ফুট দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন একই পরিবারের আট ভাই-বোন। তারা সবাই সাদা কাপড় ও উত্তরীয় পরা ছিলেন। এ সময় দ্রুতগামী সবজি বোঝাই একটি পিকআপ তাদেরকে চাপা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পালিয়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান চার ভাই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মারা যান আরো এক ভাই। আহত হন অপর দুই ভাই ও এক বোন। আহতদের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় এক ভাইকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে, বোনকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিস্টান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অপর ভাই পায়ে সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তিনি বাড়িতে আছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নিজ এলাকা হাসিনা পাড়ার সামনে মহাসড়কের পূর্বাংশে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন ওই এলাকাটি ছিল নির্জন ও কুয়াশাচ্ছন্ন। নিহতরা হলেন চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট স্টেশনের কাছের হাসিনা পাড়ার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের ৫ পুত্র অনুপম শর্মা (৪৫), নিরূপম শর্মা (৪৩), দীপক শর্মা (৪০), চম্পক শর্মা (৩৮) ও চমেক হাসপাতালে মারা যাওয়া শরণ শর্মা (২৬)। আহতরা হলেন রক্তিম শর্মা (৩০), প্লাবন শর্মা (২৮) ও বোন মুন্নী শর্মা (৩৪)। ডুলাহাজারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর বলেন, মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এক পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ায় পুরো ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে নিহতদের সৎকারের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মহাসড়কের মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, যখন দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয় তখন ছিল ভোরবেলা এবং দুর্ঘটনার স্থানটি অনেকটাই নির্জন। তাই ঘাতক পিকআপটিকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে সেটি শনাক্ত ও চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে।
খবর পেয়ে নিহতদের বাড়িতে ছুটে যাওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, বাবার শ্রাদ্ধের আগের দিন একসঙ্গে এত সদস্যের প্রাণহানি হৃদয় বিদারক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।
চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, ঘটনাটি মহাসড়কের। তাই এর সবকিছু দেখভাল করবে হাইওয়ে পুলিশ। এরপরও অজ্ঞাত পিকআপ ও চালককে শনাক্ত করার জন্য থানা পুলিশ সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে হাইওয়ে পুলিশকে।
পরে তিনি জানান, বিকেলে পিকআপটি শনাক্ত করা হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার পরপরই গাড়িটি ডুলাহাজারা স্টেশনের কাছে ফেলে পালিয়ে যান চালক। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে। গাড়িটির সামনের অংশের গ্লাস ভেঙে গেছে। তাই সামনের অংশ কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। গাড়িটির নম্বরের সূত্র ধরে চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ক্রোধে ফেটে পড়ে বাংলার জনগণ
পরবর্তী নিবন্ধনগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জিয়া কারাগারে