ঈদেও পর্যটক শূন্য পাহাড়

করোনা নিষেধাজ্ঞায় পুঁজি হারানোর শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | রবিবার , ২৫ জুলাই, ২০২১ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

করোনা নিষেধাজ্ঞায় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় এবার ঈদেও পর্যটক শূন্য খাগড়াছড়ি। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ৫ মাস ধরে বন্ধ খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন কেন্দ্র। এই নিয়ে চার ঈদ আয় শূন্য পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায় পুঁজি হারানোর শঙ্কায় এ খাত সংশ্লিষ্টরা। ব্যবসায়ীরা জানান, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। পর্যটনের ভবিষ্যত নিয়ে আমরা শঙ্কিত। প্রসঙ্গত, দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় চলতি বছরে গত ১৪ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর খাগড়াছড়িতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটকের সমাগম ঘটে। আলুটিলা গুহা, রিছাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্কসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে পর্যটকে ঠাসা থাকলেও বর্তমানে সেখানে সুনসান নিবরতা। পর্যটকশূন্য হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এই খাতের আর্থিক ক্ষতি। কাজ হারিয়ে অনেকে বেকার সময় কাটাচ্ছেন। অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারানোর দশায়। লাখ লাখ বিনোয়োগের পর আয় শূন্য হোটেল রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটির সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে রিসোর্ট, কটেজ, রেস্টুরেন্টের সংখ্যা ১৫০টি। প্রতিটি রিসোর্টে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেছেন ২০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত। আবার অনেকে মাসিক চুক্তিতে রিসোর্ট ইজারা নিয়েছেন। মাসিক ভাড়া পরিশোধ নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আবার অনেকে পরিশোধ করেছেন পুরো বছরের অর্থ। অর্থ পরিশোধ করলেও আয় নেই তাদের। এই অবস্থা চলমান থাকলে ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাজেকের পর্যটন ব্যবসায়ী জিয়াউল হক জানান, চলমান লকডাউন আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি ৯ লাখ টাকা। মাসিক চুক্তিতে নেয়া রিসোর্টের ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়া কর্মচারীদের বেতনের অর্ধেক পরিশোধ করতে হচ্ছে। কেবল সাজেকে পযর্টনের সাথে জড়িত রয়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ। তারা এখন বেকার। করোনাকালে টিকে থাকতে সরকারের কাছে আমরা স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ চাই।
খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল গাইরিং এর তত্ত্বাবধায়ক প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা জানান, চলমান লকডাউনে আমরা হোটেল বন্ধ রেখেছি। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিতে হচ্ছে। এছাড়া হোটেলের অন্যান্য খরচ তো আছেই। কেবল বেতন ভাতা খাতেই মাসে খরচ হয় এক লাখ টাকা। বড় বেকায়দায় রয়েছি।

সাজেকের সাম্পারি রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাপলা ত্রিপুরা জানান, গত বছর ৫ মাস করোনার কারণে বন্ধ ছিল। এবারও ৫ মাস বন্ধ। গত বছরের ক্ষতি আমরা পুষিয়ে উঠতে পারিনি। চলতি লকডাউনে আমার ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১৬ লাখ টাকা।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের ইউনিট ব্যবস্থাপক এ কে এম রফিকুল আলম জানান, খাগড়াছড়ি ও সাজেকে হোটেল মোটেলের সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। এসব হোটেলের রক্ষণাবেক্ষণ করতে অনেক ব্যয় হচ্ছে। গত ৫ মাসে খাগড়াছড়ি ও সাজেকে পর্যটন ব্যবসায়ীদের অন্তত ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদায় বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু সাইমন ড্রিং
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত