আলোকিত জীবন গড়ার অবারিত সুযোগ

আ ব ম খোরশিদ আলম খান ম

| শুক্রবার , ২৪ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

যাবতীয় পাপ পঙ্কিলতামুক্ত থেকে আলোকিত জীবন গঠনের অবারিত সুযোগ এনে দেয় রোজার মাস। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে মাহে রমজান। রমজানের প্রথম দশদিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন মাগফেরাত এবং শেষ দশদিন নাজাত তথা জাহান্নাম থেকে মুক্তির সওগাত নিয়ে রোজাদারের কাছে রোজার মাস আবির্ভূত হয়।

 

গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে রমজান মাসের এক ফালি বাঁকা চাঁদ দেখা গেলে রোজাদারদের মাঝে খুশির আমেজ বয়ে যায়। আজ থেকে মাসব্যাপী সিয়াম উৎসব শুরু হলো। দুনিয়াবি ঝক্কি ঝামেলা ও ব্যস্ততা কমিয়ে রোজাদাররা এ মাসে ইবাদত বন্দেগিতে মনোনিবেশ করে। রমজান মাস হলো পরকাল

তথা আখেরাতের পুঁজি অর্জনের মাস, পুণ্য কর্মের মধ্য দিয়ে আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জনের মাস। এই মাসে একটি নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরজ সমতুল্য আর ফরজ ইবাদত অন্য মাসের ৭০টি ফরজের সমতুল্য। এটি মেহেরবান দয়ালু আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে রোজাদারের প্রতি বড় নিয়ামত। বান্দার প্রতি মহান

আল্লাহর অপরিসীম করুণাই হলো মাহে রমজানের মাসব্যাপী এই রোজা। কেউ যদি নিজের জীবনকে সুন্দর ও আলোকিত করতে চায় তার জন্য উপযুক্ত সুযোগ হলো রমজান মাস। পাপমুক্ত আলোকিত পুণ্যময় জীবন গঠনের জন্যই রোজার বিধান দিয়েছেন মহান স্রষ্টা আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন। কোরআন

মজিদে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিকে রোজার বিধান দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া (খোদাভীতি) অবলম্বন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা : ১৮৩)

কোরআন মজিদের উপরোক্ত বাণী ও নির্দেশনা দ্বারা বুঝা গেল, রোজার উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাকওয়াবান হওয়া বা পাপ পঙ্কিলতামুক্ত আলোকিত জীবন গঠন করা। সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার, যৌনতা এবং পাপাচার, ভোগ বিলাস ও অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকার নামই রোজা। প্রাপ্ত বয়স্ক,

শারীরিকমানসিকভাবে সুস্থ সক্ষম মুসলিমের জন্য রোজা রাখা ফরজ। রোজা শুধু পানাহার ও যৌন সংক্রান্ত পাপাচার থেকে নিবৃত্ত রাখে না, চোখ কান জবান ইত্যাদি অঙ্গকেও পাপাচার থেকে বিরত রাখে। রোজার মাসে কুপ্রবৃত্তি দমন, সুকুমার বৃত্তি চর্চারই সুযোগ পান রোজাদার মুসলমানরা। হাদিস শরিফে প্রিয়

নবীজী (.) বলেনরমজান মাসে একজন ফেরেশতা অবিরত ঘোষণা করতে থাকেন-‘হে কল্যাণ প্রত্যাশী, পুণ্যকর্মে অগ্রসর হও। আর পাপী ব্যক্তিকে ডেকে ডেকে বলেনহে মন্দকাজে লিপ্ত ব্যক্তি! মন্দ কাজ থেকে নিবৃত্ত হও।’ বেশি বেশি নেকি ও পুণ্যকর্মে নিবেদিত হয়ে আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জনের সুযোগ এনে

দেয় রোজার মাস। তাই যাবতীয় পাপাচার অনাচার থেকে বিরত থাকার মাধ্যমেই রোজার ফজিলত ও মাহাত্ম্য অর্জনে প্রত্যেক রোজাদারকে সচেষ্ট হতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেটি সংকটে ইউরিয়া সরবরাহ ব্যবস্থায় ধস
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র রমজান শুরু