অক্সফোর্ডের টিকার দুই ডোজ ৮৫-৯০ শতাংশ কার্যকর

| শনিবার , ২২ মে, ২০২১ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা কোভিশিল্ডের দুই ডোজের পূর্ণাঙ্গ কোর্স করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ কার্যকর বলে যুক্তরাজ্যের এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুদ যখন ফুরাতে শুরু করেছে এবং দ্বিতীয় ডোজ টিকা অনেকে পাবেন কিনা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তখন এই সুখবর এলো।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের (পিএইচই) সর্বশেষ বিশ্লেষণ বলছে, কোভিশিল্ড টিকার দুই ডোজ উপসর্গ বা লক্ষণগত রোগের ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকর। রয়টার্স যখন এই খবর প্রকাশ করেছে, তখন স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আছে মোটে চার লাখ ডোজ। কয়েকটি জেলায় টিকাদান বন্ধ হওয়ার পথে। খবর বিডিনিউজের।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাদানের ‘রিয়েল-ওয়ার্ল্ড ডেটা’ বিশ্লেষণ করে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে পিএইচই। করোনাভাইরাস মহামারীতে প্রথম থেকে ব্রিটেনও বেশ ধুঁকেছে। মৃত্যুর দিক থেকেও দেশটিকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। অন্য দেশের তুলনায় সেখানে সবার আগে টিকা দেওয়া শুরু হয়। পিএইচই বলছে, এতে টিকা প্রয়োগের প্রতিক্রিয়া ও কার্যকারিতার বিষয়ে গবেষণার জন্য বাস্তবসম্মত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সহজে।
সাপ্তাহিক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, টিকা দেওয়া হয়নি এমন মানুষের চেয়ে কোভিশিল্ড যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকার ৮৯ শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকার কার্যকারিতা ৯০ শতাংশ।
টিকাদান কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ব্রিটিশ মন্ত্রী নাদিম জাহায়ি বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৯০ শতাংশ কার্যকারিতার এই তথ্য অবিশ্বাস্য এক ইতিবাচক প্রভাবের প্রতিফলন।
পিএইচই বলেছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে করা এমন বিশ্লেষণ এটাই প্রথম। রিয়েল-ওয়ার্ল্ড ডেটা নিয়ে করা এই বিশ্লেষণটি এখনও কোনো সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়নি। আরো ডেটা যোগ হলে নতুন তথ্য পাওয়ার কাজের ক্ষেত্রে আরও আস্থা বাড়াবে।
যুক্তরাজ্যে সবার আগে ফাইজারের টিকা দেওয়া শুরু হয় ডিসেম্বরে। পরের মাসে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। এপ্রিল থেকে দেওয়া হচ্ছে মার্কিন কোম্পানি মর্ডানার টিকা। পিএইচই জানায়, ফাইজারের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার আগে এবং প্রথম ডোজ দেওয়ার ১০ সপ্তাহ পর টিকার ‘কার্যকারিতা কিছুটা কম থাকে’।
ব্রিটেন দুই ডোজের ব্যবধান বাড়িয়ে ১২ সপ্তাহ করেছে। যদিও ফাইজার সতর্ক করেছে, ট্রায়ালে তিন সপ্তাহের ব্যবধানের বাইরে এটির কার্যকারিতার তথ্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে গত সপ্তাহে দেশটিতে পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের জন্য দুই ডোজ টিকা দেওয়ার ব্যবধান কমিয়ে আট সপ্তাহে নামিয়েছে। এর উদ্দেশ্য ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ভারতীয় ধরনের হাত থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেওয়া।
এর আগে গত বছর ২৩ নভেম্বর প্রকাশিত আরেক গবেষণায় বলা হয়, কোভিশিল্ড ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীকে করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর সুরক্ষা দিতে পেরেছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি জানায়, তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে এই টিকার দুই ধরনের ডোজের তথ্য বিশ্লেষণে একটিতে ৯০ শতাংশ এবং অন্যটিতে ৬২ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গেছে। অর্থাৎ গড়ে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে এ টিকা কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে ডোজের মাত্রা পরিবর্তন করে দিলে তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর হতে পারে। অন্যদিকে ১৯ মার্চ এই টিকার ভ্যাকসিন নিয়ে পর্যালোচনা শেষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইএমই এটিকে ‘নিরাপদ ও কার্যকর’ অ্যাখ্যা দেয়। এই টিকার উপকার ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি বলেও উল্লেখ করা হয় এই পর্যালোচনায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাজি ছাড়াই দ্বিতীয় তৃতীয় বিয়ে, ছিল না কাবিননামা-দেনমোহর
পরবর্তী নিবন্ধআম কুড়াতে গিয়ে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু