ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে দুই শিশুর মৃত্যু নাপা সিরাপ খেয়ে নয়, পরকীয়ার জেরে মিষ্টির সাথে বিষ মেশিয়ে খাইয়ে তাদের মা লিমা বেগম সন্তানদের হত্যা করেছেন। এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ উল্লেখ করে বাদী হয়ে মামলা করেছেন মারা যাওয়া দুই শিশুর বাবা ইটভাটা শ্রমিক ইসমাইল হোসেন। মামলায় ওই শিশু দুটির মা লিমা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলায় লিমা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক সফিউল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে এসব তথ্য জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, লিমা আশুগঞ্জের একটি চালকলে কাজ করেন। আর তার স্বামী কাজ করেন ইটভাটায়। চালকলে কাজ করার সুবাদে আরেক শ্রমিক সফিউল্লার সঙ্গে লিমার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তারা বিয়ে করারও সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি আরও জানান, পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দুই শিশু ইয়াছিন ও মোরসালিনকে খাইয়ে হত্যা করেন মা লিমা বেগম। মৃত্যুর ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নাপা সিরাপের রিঅ্যাকশন হয়েছে বলে প্রচার করা হয়। কিন্তু লিমার আচরণে প্রথমেই পুলিশের সন্দেহ হয়। অধিকতর জিজ্ঞাসার পর তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় লিমার প্রেমিক সফিউল্লাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১০ মার্চ আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ইসমাঈল হোসেনের দুই ছেলে ইয়াছিন ও মোরসালিন নাপা সিরাপ খেয়ে মারা যায় বলে অভিযোগ তোলেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
সেই সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘নাপা সিরাপ’ বিক্রির নির্দেশনা দেয় জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের যে ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ কেনা হয়েছিল, সেখান থেকে জব্দ করা বাকি সিরাপ পরীক্ষায় মান সঠিক পাওয়া গেছে বলে জানায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।