কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় দর্শকদের তাণ্ডবের ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছে জেলার ক্রীড়াঙ্গন। বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন ক্রীড়া সংস্থা ও ক্রীড়া অঙ্গনের লোকজন। স্টেডিয়ামের এমন দশায় থমকে গেছে ক্রীড়া অঙ্গনের কার্যক্রম। তবে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন।
বিডিনিউজ জানায়, স্টেডিয়াম ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এর আগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্টেডিয়ামের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন।
মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (সার্বিক) নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি কাজ করবে হামলা ভাঙচুরের বিষয়ে আর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আরেকটি কমিটি কাজ করবে অতিরিক্ত টিকিট বিক্রি ও কালোবাজারির বিষয়ে।
ঘটনার কারণ সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, মাত্রাতিরিক্ত দর্শক সমাগম হয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলাসহ সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন বলেছেন, যে পরিমাণ দর্শক সমাগম হয়েছিল সে পরিমাণ পুলিশ ফোর্স কক্সবাজার জেলাতে নেই। তারপরও র্যাব ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি যতটুকু সম্ভব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, হতাহতের ঘটনা এড়াতে আইনশৃক্সখলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপে যায়নি। যদি যেত তাহলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটত। প্রাণহানি এড়াতেই পুলিশ গুলিবর্ষণ বা তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আইনগত ব্যবস্থা সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার বা অভিযোগ দায়ের করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভিডিও দেখে হামলাকারীদের সনাক্ত করা হবে। একই সাথে কেউ উস্কানি দাতা থাকলে তাকেও খুঁজে বের করা হবে।
এ ব্যাপারে টুর্নামেন্ট কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরান হোসেন সজিব বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে থানায় মামলা রুজু করা হবে। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াছ খান গতকাল রাত ৮টায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাতেই ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে একটি এজাহার দায়ের করবে। এজাহার পেলে মামলা হিসেবে রুজু করা হবে। এরপর ভিডিও দেখে দেখে জড়িদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার কক্সবাজারে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট–২০২৫ এর ফাইনাল ম্যাচে ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় দর্শকরা। তাদের দফায় দফায় ব্যাপক হামলায় লণ্ডভণ্ড হয়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম। হামলায় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন এবং পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। স্টেডিয়ামের মূল ভবনের পাশাপাশি গ্যালারিতেও ভাংচুর চালিয়েছে উত্তেজিত দর্শকরা। এসময় অগ্নিসংযোগও করা হয়।










