আগামী ১ এপ্রিলকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ধরে এবারও বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের অগ্রিম ও ফিরতি টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাত্রীরা যেন অনলাইন থেকে ঠিকভাবে অগ্রিম টিকেট কাটতে পারেন এজন্য পশ্চিমাঞ্চলের টিকেট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে এবং পূর্বাঞ্চলের টিকিট বিক্রি শুরু হবে দুপুর ২টা থেকে। অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে আগামী ১৪ মার্চ থেকে। আর ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকেট আগামী ২৪ মার্চ থেকে বিক্রি শুরু হবে।
গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এসব তথ্য জানান রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, রেল সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব এহসানুল হক।
রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ২৪ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ১৪ মার্চ। ২৫ মার্চের টিকেট বিক্রি হবে ১৫ মার্চ। ২৬ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ১৬ মার্চ। ২৭ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ১৭ মার্চ। ২৮ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ১৮ মার্চ। ২৯ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ১৯ মার্চ এবং ৩০ মার্চের টিকেট বিক্রি করা হবে ২০ মার্চ।
ঈদের পরে ফিরতি যাত্রার ক্ষেত্রে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৪ মার্চ। ৪ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৫ মার্চ। ৫ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৬ মার্চ। ৬ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ। ৭ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ। ৮ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চ।
এছাড়া চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে ৩১ মার্চ থেকে ১ ও ২ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি করা হতে পারে। ২৫ শতাংশ টিকেট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকেট একজন যাত্রী সর্বোচ্চ একবার কিনতে পারবেন। এক্ষেত্রে চারটি আসন সংগ্রহ করতে পারবেন তিনি। কোনো টিকেট রিফান্ড করা যাবে না।
এবার কমেছে বিশেষ ট্রেন : বিগত বছরগুলোতে ঈদযাত্রায় আট থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হলেও এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনের ৭ দিনের অগ্রিম টিকেট বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি করবে রেল কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম–চাঁদপুর–চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ–ঢাকা রুটে দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৩ ও ৪ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। ভৈরব বাজার–কিশোরগঞ্জ–ভৈরব বাজার রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৫ ও ৬ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। ময়মনসিংহ–কিশোরগঞ্জ–ময়মনসিংহ রুটে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল ৭ ও ৮ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। জয়দেবপুর–পার্বতীপুর–জয়দেবপুর রুটে পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল ৯ ও ১০ নামে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে।
সভায় জানানো হয়, ঈদে অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৪৪টি (পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ থেকে ২৮টি মিটারগেজ ও সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ থেকে ৩৬টি ব্রডগেজ) যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য ১৯টি (মিটারগেজ ১৪টি ও ব্রডগেজ ৫টি) লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের ডে–অফ (সাপ্তাহিক ছুটি) বাতিল করা হয়েছে। ২৭ মার্চ থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এসব ট্রেনের কোনো ডে–অফ থাকবে না। ঈদের পরে যথারীতি সাপ্তাহিক ডে–অফ কার্যকর থাকবে। এছাড়া ঈদের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।