ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা ভাবছে দক্ষিণ কোরিয়া

| বৃহস্পতিবার , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ at ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ

প্রথমবারের মতো ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বলেছে, যদি ইউক্রেনে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক পরিসরে হামলা হয়, তবে তারা মানবিক এবং অর্থনৈতিক সহায়তার বাইরে গিয়ে দেশটির জন্য আরও বেশি কিছু করার বিষয়টি বিবেচনা করবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োল। আগামী সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় সফরে তার যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

ইয়ুন বলেন, তার সরকার ইউক্রেনকে রক্ষা ও পুনর্গঠনে কীভাবে সহায়তা করা যায় সে পথ খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছে। ঠিক যেভাবে ১৯৫০৫৩ সালের কোরিয়া যুদ্ধের সময় দক্ষিণ কোরিয়া আন্তর্জাতিক সহায়তা পেয়েছিল। যদি সেখানে এমন পরিস্থিতি থাকে যা আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় ক্ষমা করতে পারে না, যেমন বেসামরিক নাগরিকদের উপর বড় ধরনের হামলা, গণহত্যা বা যুদ্ধের আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র মানবিক বা আর্থিক সহায়তার উপর জোর দেওয়া আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, এই প্রথম সিউল প্রয়োজনে ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশটি যুদ্ধে লিপ্ত ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিপক্ষে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের একজন দক্ষিণ কোরিয়া কামানের গোলা উৎপাদনকারী বৃহৎ দেশ। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত দেশটি চেষ্টা করেছে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি বিরোধ এড়িয়ে যেতে। কারণ, দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক কোম্পানির রাশিয়ায় ব্যবসা রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার উপর মস্কোর প্রভাবের বিষয়টিও সিউলকে মাথায় রাখতে হয়। ইয়ুন বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীন আইনের অধীনে অবৈধভাবে আক্রমণের শিকার হয়েছে এমন একটি দেশকে রক্ষা এবং পুনর্গঠনে সহায়তা করার পরিমাণের সীমাবদ্ধতা থাকা ঠিক না। তবে যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এবং যুদ্ধক্ষেত্রের কী অবস্থা সেটা বিবেচনা করে আমরা সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সিউলের এই সিদ্ধান্তের জবাবে ক্রেমলিন থেকে বলা হয়, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করলে সিউলও যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের আরো বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, সিউল এই পুরো গল্পে বরং একটি অবন্ধুসুলভ অবস্থান নিয়েছে। তারা চেষ্টা করছে আরো বেশি বেশি দেশকে এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে ফেলতে। আর অবশ্যই, অস্ত্র সরবরাহ শুরু হলে তার অর্থ হবে এই যুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে জড়িয়ে যাওয়া।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মিত্রতার ৭০ বছর উদযাপন করতে আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাবেন ইয়ুন। সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাল্যবধূ দক্ষিণ এশিয়ায় : ইউনিসেফ
পরবর্তী নিবন্ধকতগুলো গোপন নথি ফাঁস হয়েছে জানে না পেন্টাগন