বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে আধুনিক যাত্রীবাহী কোচ ও ইঞ্জিন ক্রয়ের পাশপাশি পণ্য পরিবহন খাতকেও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রেলওয়েতে যাত্রী পরিবহন খাতের চেয়ে পণ্য পরিবহনে মালবাহী ট্রেনে রাজস্ব আয় অনেক বেশি। এই কারণে রেল কর্তৃপক্ষ পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে চীন থেকে ৩৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ৫৮০টি মিটারগেজ মালবাহী বগি বা ওয়াগন আমদানি করছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এডিবির অর্থায়নে এ সব মালবাহী বগি দেশে আসছে। চীনের সিআরআরসি শানডংয়ে কোম্পানির সাথে এই ব্যাপারে রেলওয়ের চুক্তি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মালবাহী বগিগুলো দেশে আসতে শুরু করেছে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এবার নতুন করে চীন থেকে যে সব ওয়াগন দেশে আসছে সেগুলো আগের চেয়ে একধাপ উন্নত। বিসি বা বগি কাভার্ড ভ্যান হিসাবে পরিচিত এ সব ওয়াগনে খাদ্যদ্রব্য, সার পরিবহন করা যাবে। কিছু থাকবে উন্মুক্ত বগি যেখানে পাথর ও এ ধরনের পণ্য পরিবহন করা যাবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে রেলের এই প্রকল্পের ক্রয় প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার পর আধুনিক প্রযুক্তির ওয়াগনগুলো দেশে আসার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে রেল ভবন সূত্রে জানা গেছে। রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানান, এর আগে সর্বশেষ ২০১৩ সালে রেলের জন্য ওয়াগন কেনা হয়েছিল। সেগুলো ছিল তেলবাহী ট্যাঙ্ক ওয়াগন ও কন্টেনারবাহী ওয়াগন।
রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২০ সালেও চীনা একটি কোম্পানির কাছ থেকে কিছু লাগেজভ্যান কেনার চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে, যার বেশ কিছু বগি চলে এসেছে। অবশিষ্টগুলো আসার পথে বলে জানা গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২,২৬৪টি মিটারগেজ ওয়াগন ও ৯৫৬টি ব্রডগেজ ওয়াগন রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে জানা গেছে, চীন থেকে নতুন ৫৮০টি ওয়াগন ক্রয়ের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। তিনি এর আগে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন। চীন থেকে ৫৮০টি মিটারগেজ ওয়াগন ক্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে প্রায় ১০ মাস আগে। চুক্তির পর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে ওয়াগনগুলো সরবরাহ করবে চীনের সিআরআরসি শানডংয়ে কোম্পানি। আগামী মাসে প্রথম চালান আসবে বলে জানা গেছে। এডিবির অর্থায়নে ৩৯৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৪ টাকা ব্যয়ে ৫৮০টি মিটারগেজ ওয়াগন কেনা হচ্ছে।