রোজিনাকে ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর

| শুক্রবার , ২১ মে, ২০২১ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের ভূমিকাকে ইতিহাসের খলনায়ক ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন হিরন জামিন আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানিতে একথা বলেন। রোজিনা ইসলামের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এহেসানুল হক সমাজী, প্রশান্ত কুমার কর্মকার, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আমিনুল গণি টিটো প্রমুখ আইনজীবী জামিন শুনানি করেন। খবর বাংলানিউজের।
জামিন শুনানিতে এহসানুল হক সমাজী বলেন যে, রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে কি ডকুমেন্টস জব্দ করা হয়েছে তার কোনো বর্ণনা নেই এজাহারে। তার কাছ থেকে কোনো ডকুমেন্টস উদ্ধার বা জব্দ করা হয়নি। এজাহারে বলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস। কিন্তু তার কোনো বর্ণনা দেওয়া নেই। তাই অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৯২৩ সালের ৩ ধারা এ ঘটনার সঙ্গে যায় না। এটা একটি জামিনযোগ্য মামলা। তিনি একজন নারী, অসুস্থ মহিলা। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক। তিনি জামিনের কোনো অপব্যবহার করবেন না। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে এই মামলাটি সাজানো, মিথ্যা এবং বানোয়াট। বিগত ৫০ বছরের মধ্যে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলা হয়নি।
আইনজীবী আমিনুল গনি টিটো বলেন, রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে লেখালেখি ও ভ্যাকসিনের বিষয়ে জাতীয়ভাবে তুলে ধরার কারণে তাকে শত্রু মনে করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীসহ সব কর্মকর্তারা। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাই যে কোনো শর্তে রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করা হোক।
ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে কী ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। যাই হোক তিনি অসুস্থ, তাই বিশেষভাবে অনুরোধ করছি তার জামিন বিবেচনা করার জন্য। জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন হিরন বলেন, পলাশী যুদ্ধের সময় ঘসেটি বেগমরা প্রাসাদ ষড়যন্ত্র করেছিল। এবার রোজিনা বেগম গোপন তথ্য পাচার করে একইভাবে সরকারকে উৎখাত করতে ষড়যন্ত্র করেন। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিবের রুমে থাকা অবস্থায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে রোজিনাকে বলতে শুনা যায় আমি ভুল করেছি, আমি মুচলেকা দেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিওটি দাখিল করতে সময় চেয়ে জামিন শুনানি পেছানোর আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন হিরন।
এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী তার বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, সাক্ষ্য আইনের ২৪ ও ২৫ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতীত অন্য কারও কাছে দেওয়া বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আসামি পুলিশ বা অন্য কারও কাছে কোনো বক্তব্য আইনত গ্রহণযোগ্য নেই। এ ধরনের ভিডিও তার জামিন পাওয়া বা না পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো গ্রহণযোগ্য বিষয় না। রাষ্ট্রপক্ষ এটা দাখিলের জন্য সময় চাইতে পারে না, তদন্তকালে এ ধরনের ডকুমেন্টস কেবল তদন্ত কর্মকর্তা দাখিল করতে পারেন। এরপর শুনানি শেষে আদালত আদেশ পরে দেবেন বলে জানান। বেলা চারটার দিকে আদালত আদেশের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন। ওইদিন মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আদেশ হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকারাগারের বাইরে চিকিৎসার জন্য আবেদন বাবুল আক্তারের
পরবর্তী নিবন্ধথমকে আছে কাস্টমসের ই-অকশন কার্যক্রম