থমকে আছে কাস্টমসের ই-অকশন কার্যক্রম

৮ মাসে মাত্র দুটি নিলাম

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২১ মে, ২০২১ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

থমকে আছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ই-অকশন (অনলাইন নিলাম) কার্যক্রম। উদ্বোধনের প্রায় ৮ মাসে মাত্র দুটি নিলামে তোলা হয়েছে ৩৫ লট পণ্য। এরমধ্যে দ্বিতীয় নিলামে সবগুলোই ছিল পেঁয়াজ। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) বলছেন, ই-অকশনে উল্টো ভোগান্তি বেড়েছে। ই-অকশনে কেবল দরপত্র জমা দেয়াটাই হয়েছে অনলাইনে। বাকিসব আগের মতো সেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই। তাই ই-অকশনের উদ্দেশ্যটাই এক প্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। ই-অকশন ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো সমাধান ছাড়া উদ্বোধন করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিডাররা। এদিকে আগামী ২৫ মে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ফেব্রিক্সসহ বিভিন্ন ধরণের ৭৪ লট পণ্য নিলামে তুলছে কাস্টমস কর্র্র্তৃপক্ষ।
নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোবর দুপুরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক নীতি) মো. মাসুদ সাদিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ই-অকশন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুদ সাদিক বলেন, কাস্টম হাউসের কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করার প্রতি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এর অংশ হিসেবে আমরা অনলাইন নিলাম শুরু করছি। অনলাইন নিলামে একজন বিডার ঘরে বসে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। এটি একটি নতুন দিগন্ত। একইদিন ই-অকশনের মাধ্যমে ১৬ লটে ফেব্রিঙ, রসুন, সোডা অ্যাশ, আয়রণ পাইপ ও স্ক্র্যাপ জাতীয় পণ্য নিলামে তোলা হয়। নিলামে ১৬টি লটের মধ্যে ৮টিতে মোট ৩৮ দরপত্র জমা পড়ে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ১৯ লটে প্রায় ১১শ টন পেঁয়াজ ই-অকশনে তোলা হয়। সেই অকশনে মোট ৯১টি দরপত্র জমা পড়েছে।
ই-অকশনের বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিয়মিত বিডার, আর রেজা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জহিরুল ইসলাম নাঈম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ই-অকশনের যে সুফলের কথা চিন্তা করেছিলাম তার কিছু্‌ই আমরা পাচ্ছি না। ই-অকশনে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র দরপত্রটাই আমরা অনলাইনে জমা দিতে পারছি। নিলামের স্থায়ী আদেশ অনুযায়ী ১২ কার্যদিবসের মধ্যে পণ্যের অনুমোদন দিতে হয়। যদিও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আমরা এটি খুব কম সময়ে অনুমোদন পেয়েছি। তবে আশা করেছিলাম, ই-অকশনের ক্ষেত্রে সেটি হবে না। অন্যদিকে ম্যানুয়াল পদ্ধিতির নিলামে দরপত্র জমার দেয়ার সময়ই পে অর্ডার জমে দিতে হয়। কিন্তু ই-অকশনে সর্বোচ্চ দরদাতার তালিকা প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পে অর্ডার জমা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এখন কোনো একজন বিডার যদি সর্বোচ্চ দরদাতার নির্বাচিত হওয়ার পর পে অর্ডার জমা না দেন, সেক্ষেত্রে পুরো নিলাম প্রক্রিয়াই বাধাগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। ই অকশন মানে সব প্রক্রিয়া অনলাইনে হতে হবে। কিন্তু এখন ই-অকশনটা ভোগান্তির অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ই অকশনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে পেমেন্ট থেকে শুরু করে সব প্রক্রিয়া ডিজিটাইলাইজড করতে হবে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (নিলাম শাখা) মো. আল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। ই-অকশনের কিছু জটিলতা আছে। সেইসব জটিলতা নিরসন করে ই-অকশনের মাধ্যমে পণ্য নিষ্পত্তি করা হবে। এটা ঠিক যে, বিডাররা ই অকশনের কোনো সুফল পাননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোজিনাকে ঘসেটি বেগমের সঙ্গে তুলনা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর
পরবর্তী নিবন্ধজামিনের অপেক্ষা বাড়ল রোজিনার, আদেশ রোববার