যে প্রাণীর জন্মকালীন ওজন ২৭ হাজার কেজি

রাজন বড়ুয়া | বুধবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২১ at ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ

তোমরা কি এমন প্রাণীর নাম বলতে পারবে যে প্রাণী ঘুমন্ত অবস্থায়ও খাবার খায়? বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে জানা গেছে, সিটাসিয়া বর্গভুক্ত প্রাণী তিমি গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন থাকা অবস্থায়ও খেতে পারে অনেক মাছ। বিশালায়তন নীল তিমি এক গ্রাসেই যে পরিমাণ মাছ খায় ঐ পরিমাণ মাছ ২০০ জনের বেশি মানুষের পক্ষেও নাকি খাওয়া সম্ভব নয়। আর একটি তিমি দিনে প্রায় তিন থেকে চার হাজার কেজি খাবার খায়। নীল তিমি প্রায় ১০৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা এবং ওজন ১৫০ টনেরও বেশি হতে পারে। একটি বাচ্চা নীল তিমির জন্মকালীন ওজন প্রায় ২৭ হাজার কেজি। একটি বাচ্চা তিমি দৈনিক প্রায় ৬০০ লিটার মায়ের দুধ পান করে। একটি নীল তিমির জিহ্বা একটি হাতির চেয়েও ভারি হতে পারে। আর হৃদপিন্ড একটি গাড়ির আয়তনের থেকে বেশি।
তিমির শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া অনেক প্রাণীর থেকেই ভিন্ন। তিমি নিজেই ঠিক করে সে কখন শ্বাস গ্রহণ করবে। তিমি একটানা খুব বেশি সময়ের জন্য ঘুমাতে পারে না কারণ তাদের শ্বাস নেওয়ার জন্য ২০-২৫ মিনিট পর পানির ওপর ভেসে উঠতে হয়। ধারণা করা হয় তিমির মস্তিষ্কের অংশদুটি পালাক্রমে ঘুমায়। তাই তিমি কখনো পুরোপুরি ঘুমাতে পারে না। তবে তিমি তার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম গ্রহণ করে। তিমির এক চোখ খোলা রেখে ঘুমানোর কারণেই এমনটি মনে করা হয়।
তিমি যখন নিঃশ্বাস ছাড়ে তখন সে তার মাথার ওপর দুই ছিদ্র দিয়ে পানি ফোয়ারার মতো করে ছুড়ে দেয়। নীল তিমির গড় আয়ু মানুষের গড় আয়ু থেকে বেশি। নীল তিমি গড়ে ৮০ থেকে ৯০ বছর বাঁচে। সবচেয়ে বেশিদিন বেঁচে থাকা নীলতিমির বয়স ছিল ১১০ বছর।
আরেকটি প্রজাতির তিমি হচ্ছে স্পার্ম হোয়েল। দক্ষিণ মহাসাগরে এটির দেখা মেলে। কিছু কিছু স্পার্ম হোয়েলের পরিপাকতন্ত্রে নিঃসৃত রস জমাট বেঁধে শক্ত হয়ে তৈরি হয় অ্যাম্বারগ্রিস যাকে তিমির বমিও বলা হয়, যা খুবই মূল্যবান পদার্থ। এগুলোকে আবার প্রাকৃতিক সোনাও বলা হয়। পারফিউম বা সুগন্ধি শিল্পে এই অ্যাম্বারগ্রিস ব্যবহার করা হয়। এ কারণে সুগন্ধি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর কাছে এর ব্যাপক চাহিদা। এর বিশেষত্ব হচ্ছে তাজা অ্যাম্বারগ্রিস থেকে বাজে গন্ধ নির্গত হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি যতোই পুরনো হতে থাকে ততোই এটি সুগন্ধি ছড়াতে থাকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাঙের বিয়ে
পরবর্তী নিবন্ধরাসেল মানে হাসিখুশি