মাদক ব্যবসায়ীকে ছিনতাই, পুলিশের সাথে সংঘর্ষে বোনের মৃত্যু

কালুরঘাট ফাঁড়িতে হামলা, দুই পুলিশ আহত

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

মাদক ব্যবসায়ী ভাইকে ছিনিয়ে নিতে গিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন কালুরঘাট এলাকায় ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটকের পর ফাঁড়িতে নেয়ার পথে পুলিশের ওপর হামলা করে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক নারী আহত হন। হাসপাতালে নেয়া হলে নাজমা নামে ওই নারীর মৃত্যু হয়। গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান বলেন, হানিফ ও দেলোয়ার নামের দুজনকে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটকের পর কালুরঘাট ফাঁড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল চান্দগাঁও থানা পুলিশ। এ সময় ওই এলাকার তৃতীয় লিঙ্গের কিছু মানুষ ও সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিদের ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে তারা সড়ক অবরোধ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হামলায় ফাঁড়ির ইনচার্জসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

এদিকে ঘটনার সময় ফাঁকা গুলিতে নাজমা নামের এক নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। কালুরঘাটের ঘটনায় হাসপাতালে এক নারীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সাদেকুর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এক নারীর মৃত্যুর খবর শুনেছি, তবে নাম-পরিচয় জানি না।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্পর্কে নাজমা চিহ্নিত মাদক কারবারি হানিফের বোন। পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জের বাসিন্দা হানিফ মোহরার ৯ নম্বর ও ৮ নম্বর রেললাইনকেন্দ্রিক ইয়াবা-মদসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এসব কাজে হিজড়া নামধারী (তৃতীয় লিঙ্গের) একটি বাহিনীও রয়েছে তার। সরকারদলীয় কতিপয় নেতাকে ভাগ-বাটোয়ারা দিয়ে অনেকটা নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল হানিফ। মাদক ও খুনসহ একাধিক মামলা থাকার পরও হানিফ থেকে যায় পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গতকাল সন্ধ্যায় ৯ নম্বর পুলের গোড়ায় হানিফের বাসা থেকে চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রোকনুজ্জামান মাদক কারবারি হানিফ ও শরীফকে ৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় ‘হিজড়া বাহিনী’সহ সহযোগীরা হামলা চালিয়ে হানিফ ও শরীফকে ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা পুলিশ ফাঁড়িতেও হামলা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হানিফ বাহিনীর সংঘর্ষ হলে হানিফের বোন নাজমা গুলিবিদ্ধ হন এবং দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ গেলেও হানিফকে আর নিজেদের হেফাজতে নিতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালের অক্টোবরে মৌলভী বাজারের ৯ নম্বর পোল এলাকায় মাদক ব্যবসার অভিযোগে আগেও একবার হানিফকে আটক করেছিল র‌্যাব সদস্যরা। তবে সেবারও সড়ক অবরোধ ও হামলার মাধ্যমে তাকে ছিনিয়ে নেয় তৃতীয় লিঙ্গের দলসহ তার সহযোগীরা। হানিফের বাবা, ভাই-বোন মাদক কারবারে জড়িত বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাওয়া ভবনের সবচেয়ে বড় চোরের হাতে দেশ তুলে দেয়া যাবে না
পরবর্তী নিবন্ধ৩০ সেকেন্ডে মোটরসাইকেল চুরি!