পাঁচশ খামারে কোরবানের জন্য প্রস্তুত পাঁচ হাজার গরু

গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যা কম হলেও চাহিদা বিবেচনায় যথেষ্টই বলছেন সংশ্লিষ্টরা

মাহবুব পলাশ, মীরসরাই | রবিবার , ২৬ মে, ২০২৪ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের কৃষি এবং খামার প্রধান জনপদ মীরসরাই উপজেলায় এবার কোরবানির জন্য অন্তত ৫শ খামারি পাঁচ হাজারের অধিক গরু প্রস্তুত করেছেন। গত বছরের চেয়ে এ সংখ্যা কম হলেও চাহিদার তুলনায় এটা যথেষ্ট বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরমধ্যে আরো কয়েক হাজার গরু দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে মীরসরাইয়ে প্রবেশ করবে। আবার কয়েক হাজার গরু মীরসরাই থেকে যাবে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। খামারিরা বলছেন খাদ্য ও শ্রমের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারে এবার লাভের মুখ দেখা কঠিন হয়ে যাবে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলায় প্রায় ১২শ ছোট বড় খামার রয়েছে। তবে ভালো মানের প্রকৃত খামার রয়েছে পাঁচ শতাধিক। এবার এসব খামারে পাঁচ হাজারের বেশি গরুর বর্তমানে প্রস্তুত কোরবানির জন্য। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিরুল ফরিদ বলেন, তীব্র গরম ও প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা থেকে কোরবানির গরুগুলোকে নিরাপদ রাখতে পর্যাপ্ত পানি, সকল গরুর জন্য ফ্যানের বাতাস ও নিয়মিত পরিচর্যা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, এবার উপজেলায় সাড়ে ৪ হাজার গরুর চাহিদা রয়েছে কোরবানির জন্য। আবার অনেকে বাহির থেকে গরু নিয়ে আসতে পারেন যেমন মিঠাছরা বাজার, বামনসুন্দর এবং আবুতোরাবের বেপারীগণ উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক গরু নিয়ে আসেন। আবার এখানকার খামারিগণ ভালো ও উন্নতজাতের গরুগুলো চট্টগ্রামসহ দূরের বিভিন্ন শহরে ভালো দামে বিক্রি করতে নিয়ে যান। তবে মীরসরাই উপজেলার গরুগুলো প্রাকৃতিক সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে পালিত বলে এই উপজেলার গরুগুলোর চাহিদা রয়েছে সর্বত্র।

সরেজমিনে উপজেলার চিনকি আস্তানা এলাকায় ওহাব এগ্রোতে গিয়ে দেখা গেছে, ফার্মে মোটাতাজা করার জন্য রাখা হয়েছে অন্তত ১৫০টি গরু। তার মধ্যে রয়েছে শাহীওয়াল, রেড চিটাগাং, ফিজিয়ানসহ নানান উন্নত জাতের গরু। খামারে এবার বিনিয়োগ ও লাভের প্রত্যাশা নিয়ে জানতে চাইলে এর স্বত্তাধিকারী রাফী বলেন, এখনো বিনিয়োগের পরিমাণ হিসেব করিনি। তবে খাবারের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃত অর্থে লাভের দেখা আদৌ পাবেন কিনা সে ব্যাপারে তিনি সন্দীহান।

উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামের প্রান্তিক গৃহস্থ কোরবানির জন্য পালন করা গরু লাখ টাকা দাম পাওয়ার আশা করছেন। কারণ খাবারের দাম বেশি। নিজে সারাবছর সময় দিয়েছেন। আসলে বাজার আরো কাছে এলেই বোঝা যাবে লাভ হবে নাকি ক্ষতি স্বীকার করে বিক্রি করে দিতে হয়।

জানা গেছে, উপজেলায় গত বছর গরু উৎপাদন হয়েছিল ৯ হাজার। এবার তা এভাবে কমে যাওয়ার কারণ কী জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকির বলেন, আসলে গবাদি পশুর খাবারের দামের সাথে বিক্রি মূল্যের সমন্বয় করতে পারছেন না অনেক খামারি। আবার অনেকেই এবার অতিরিক্ত তাপমাত্রার মৌসুমে কোরবান পড়ায় ভয়েও কিছুটা পিছিয়ে গেছেন। তবুও এখনো অনেক প্রান্তিক কৃষক এবং গৃহস্থের কাছে থাকা পর্যাপ্ত গরু উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করা যাবে এমনটাই প্রত্যাশা তার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথমে দেয়া হয় আগুন, তারপর কাটা হয় গাছ
পরবর্তী নিবন্ধমুক্তিপণে ফিরলো অপহৃত দুইজনের একজন, পুলিশের দাবি উদ্ধার