মহাকাব্যের বিশ্বজয়

মোহাম্মদ বেলাল হোসেন | রবিবার , ৭ মার্চ, ২০২১ at ৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ

বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে সাহিত্যিক এস ওয়াজেদ আলী তাঁর ‘ভবিষ্যতের বাঙালি’ গ্রন্থে লিখেছিলেন- “বাঙালি জাতি এক মহামানবের প্রতীক্ষায় আছে। যিনি কেবল ভারতবর্ষ নয়, কেবল প্রাচ্য ভূখণ্ড নয়, সমগ্র বিশ্ববাসীর পথ প্রদর্শক হবে-সত্য, সুন্দর, শুভ জীবন পথের”। কী আশ্চর্য! মাত্র দু দশকের ব্যবধানে লেখকের সেই কথা সত্য প্রমাণিত হল। বাঙালির সামনে দৃশ্যমান হতে শুরু করল বিশ্বজয়ী সেই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ছিল এক অগ্নিঝরা মাহেন্দ্রক্ষণ। সেদিন সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ৭ মার্চের ভাষণের পর বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যম রয়টার্স এর প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়- “বিশ্বের ইতিহাসে এরকম একটি পরিকল্পিত বিন্যাস্ত ভাষণ খুঁজে পাওয়া যায়না। যেখানে একই সঙ্গে বিপ্লবের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে এবং সাথে সাথে দেশ পরিচালনার দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে”। এই কালজয়ী ভাষণ শুনে কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন- “৭ মার্চের ভাষণ শুধু ভাষণ নয় এটি একটি অনন্য রণকৌশলের দলিল। এ ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের জন্য নয় সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে”। এক কথায় ৭ মার্চের ভাষণ শুধু বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কেই নাড়া দেয়নি, এটি সারা বিশ্বের নিপীড়িত, শোষিত, এবং স্বাধীনতাকামী মানুষকে জাগ্রত করে তুলেছিল।
কেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ ও ঐতিহ্য সম্পদ
ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ Jacob F. Field বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ৪১টি ভাষণ নিয়ে ২০১৩ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশ করেন বিখ্যাত গ্রন্থ ‘We Shall Fight on the Beaches: The Speeches that Inspired History’ এই বইতে (৪৩১ খ্রি: পূর্ব) গ্রিক নগর রাষ্ট্র এথেন্সের রাষ্ট্র নায়ক পেরিক্লিস থেকে শুরু করে ১৯৮৭ সালে বার্লিন দেওয়ালের সম্মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এর ঐতিহাসিক ভাষণের সময়কাল পর্যন্ত মোট ৪১টি ভাষণ স্থান পেয়েছে। বইতে স্থান পাওয়া ভাষণগুলোর মধ্যে ৪টি ভাষণ সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হল- (১) সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহম লিংকন এর গ্রেটিসবার্গের ভাষণ-১৮৬৩ (২) বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং এর I have a Dream শিরোনামের ভাষণ-১৮৬৩ (৩) সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনষ্টন চার্চিলের We Shall Fight on the Beaches শিরোনামের ভাষণ-১৯৪০ (৪) বঙ্গবন্ধু’র ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ-১৯৭১।
উপরোক্ত চারটি ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল ব্যতিক্রম ও অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ। যে কারণে ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ ও ঐতিহ্য সম্পদরূপে চিহ্নিত করা হয়েছে তা নিম্নে আলোকপাত করা হল :-
(১) ভাষণ দেওয়ার সময় আব্রাহাম লিংকন ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, চার্চিল ছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, সুতরাং রাষ্ট্র প্রধান হিসেবে বক্তব্য দানে তাঁদের কোন জীবনের ঝুঁকি ছিলনা। অন্যদিকে মার্টিন লুথার কিং ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবৈষম্যবিরোধী নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা। ক্ষমতার কেন্দ্রে না থাকলে যে সময় তিনি ভাষণটি দিয়েছিলেন, তখন প্রেসিডেন্ট কেনেডি সরকার তাঁর সমর্থক ছিল। এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁরা সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিল। বিপরীতে ৭ মার্চ যখন বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিচ্ছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে) তখন তিনি কোনরাষ্ট্র বা সরকার প্রধান ছিলেন না। তিনি ছিলেন মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের নেতা। তাঁর বক্তব্য দানের পরিবেশ ও নিরাপদ ছিলনা। আকাশে পাকিস্তানী বাহিনীর বিমান চক্কর দিচ্ছিল, যে কোন মুহুর্তে বোমা মেরে হত্যা করার ঝুঁকি ছিল।
(২) জাতিসংঘের বিশ্ব মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (১০ ডিসেম্বর ১৯৪৮) ঔপনিবেশবাদ, বর্ণবৈষম্যবাদ, জাতি-নিপীড়ন ইত্যাদি থেকে পৃথিবীর সর্বত্র জাতি-জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের নীতি গৃহীত ও স্বীকৃত হয়। পাকিস্তানী অভ্যন্তরীণ ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ ও জাতি-নিপীড়নের নিগড় থেকে বাঙালীর জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে নির্দেশিত বঙ্গবন্ধু’র সংগ্রাম বিশ্ব মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিল।
(৩) একটি রাষ্ট্রের বন্ধন ছিন্ন করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ ছিল তৃতীয় বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম নজির সৃষ্টিকারী ঘটনা। বাঙালির জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত দীর্ঘ ঐতিহাসিক আন্দোলন-সংগ্রামের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রেখে এ-কথা বললে বোধ হয় অত্যুক্তি হবে না যে, একটি ভাষণে (৭ মার্চ) একটি জাতি-রাষ্ট্রের (বাংলাদেশ) সৃষ্টি এবং তাও মাত্র নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে, যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালে ভিয়েতনামের জনগণের বিপ্লবী নেতা হো চি মিন কর্তৃক বৈদেশিক নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে, তাঁর দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ফরাসি ও মার্কিন-বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে রূপ নিয়ে দীর্ঘ ত্রিশ বছর যুদ্ধ শেষে ১৯৭৫ সালে তা সফলতা লাভ করে।
(৪) আমেরিকার বর্ণবৈষম্যবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা, মার্টিন লুথার কিং (১৯২৯-১৯৬৮)-এর মতো জনগণকে শুধু ‘I have a dream’ বা একটি ‘স্বপ্নের কথা’ (দাসপ্রথা বিলুপ্তি) বলতে নয়, বরং ৭ মার্চ বাঙালীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জনতার উত্তাল মহাসমুদ্রে হাজির হন বাঙালীর হাজার বছরের লালিত স্বাধীনতার স্বপ্নের বাস্তবায়ন তথা ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র সংগ্রামের উদাত্ত আহ্বান নিয়ে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আসন্ন যুদ্ধের, বিশেষ করে গেরিলা যুদ্ধের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণে বাঙালীদের দিক-নির্দেশনা দান শেষে বঙ্গবন্ধু’র আহবান ছিল “ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেয়ার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে”। অর্থাৎ তিনি গ্রেপ্তার হলেও যেন মুক্তিসংগ্রাম চলমান থাকে, এ ধরনের দূরদর্শী ভবিষৎ বাণী তাঁর বক্তব্যে ব্যতিক্রমতা দান করেছে।
(৫) বাঙালীর জাতীয় মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় চূড়ান্ত পর্বে এসে একটি ভাষণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু যেভাবে দ্রুত তাঁর নিরস্ত্র জাতি-জনগোষ্ঠীকে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার স্বপ্ন অর্জনে সশস্ত্ররূপে আবির্ভূত হতে উদ্বুদ্ধ করেন, সেটিও বিশ্বের এক বিরল ঘটনা।
(৬) ৭ মার্চ এক বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সর্বদিক বিবেচনায় রেখে ধীরস্থির অথচ তেজোদীপ্ত কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু ভাষণ রাখলেন। ভাষণে একদিকে যেমন ছিল শত্রুর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান, অপরদিকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাঙালীদের অধিকার আদায়ের প্রচেষ্টা (আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ (যদি কেউ ন্যায্য কথা বলে, আমরা সংখ্যায় বেশি হলেও একজন যদিও সে হয়, তার ন্যায্য কথা আমরা মেনে নেব) মানসিকতা (গরিবের যাতে কষ্ট না হয়, যাতে আমার মানুষ কষ্ট না করে) অসাম্প্রদায়িক আদর্শ ও সম্প্রীতি (এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালী-নন বাঙালী যারা আছে তারা আমাদের ভাই, তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের ওপরে)-ভাষণের এসব দিক তথা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দায়িত্ববোধের প্রকাশ ছিল সকলের নজর কাড়ার মতো।
(৭) ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে পরিগণিত অধিকাংশ নেতৃত্বের বক্তব্য যেখানে লিখিত সেখানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি ছিল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অলিখিত, স্বতঃষ্ফূর্ত, যা এ ভাষণকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে ।
(৮) বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর একাধিক ভাষায় ইতোমধ্যে প্রকাশিত হছেছে। এতো দীর্ঘ সময় ধরে (৪৭ বছর) পৃথিবীর কোন দেশে কোন নেতার ভাষণ সে দেশের মানুষ শ্রবণ করে আসছে কি-না সন্দেহ। এটি এমনি ব্যঞ্জনাপূর্ণ ও গীতিময় যে, যতবার শ্রবণ করা হয়, ততবারই মনে হবে এই প্রথমবার শোনা হলো, কখনও পুরনো মনে হয় না। উপরোক্ত কারণ পর্যালোচনা করে বলতে পারি Jacob F. Field এর ‘We Shall Fight on the Beaches: The Speeches that Inspired History’ গ্রন্থে ‘‘The Struggle this time is the Struggle For Independence” শিরোনামে স্থান পাওয়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ১৮ মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষণটিই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণ ও বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্য সম্পদ।
ভাষণের ইউনেস্কো-স্বীকৃতি ও বিশ্বজয়
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো প্যারিসে অনুষ্ঠিত এর দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব-ঐতিহ্য দলিল’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তা সংস্থাটির ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা/বিশেষজ্ঞ কমিটি কর্তৃক দু’বছর ধরে প্রামাণ্য দালিলিক যাচাই-বাছাই শেষে ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের সম্মতিক্রমে এটি সংস্থার নির্বাহী কমিটি কর্তৃক চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়। দীর্ঘ ৪৬ বছর পরে হলেও জাতিসংঘের মতো বিশ্বসংস্থার এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। স্বাধীনতার জন্য আত্নোৎসর্গকৃত ৩০ লাখ শহীদ আর সম্ভ্রম হারানো কয়েক লাখ মা-বোনসহ আমাদের সকলের জন্য এটি এক মহা-আনন্দ ও বিরল সম্মানের ঘটনা।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সাল থেকে ইউনেস্কো বিশ্ব-ঐতিহ্য সম্পদের স্বীকৃতি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে আসছে। এ লক্ষ্যে-তারা প্রতিষ্ঠা করেছে Memmory of the world নামক আলাদা সংস্থা। এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে, ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা’র কথায়, “আমি গভীর ও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দালিলিক ঐতিহ্য ও স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য এ কর্মসূূচী পরিচালিত হওয়া উচিত, যাতে করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংলাপ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পারষ্পরিক বোঝাপড়া ও শান্তির চেতনা মনে লালন করতে পারে”। যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্মীয় উন্মাদনা, লুণ্ঠন, অপরিকল্পিত উন্নয়ন ইত্যাদি কারণে দেশে-দেশে বিশ্ব-ঐতিহ্য সম্পদ বিনষ্ট বা ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। আবার সম্পদের অপ্রতুলতার কারণেও যথাযথভাবে তা সংরক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণেও তা বিনষ্ট বা বিস্মৃতির অতল গহবরে হারিয়ে যাচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় ইউনেস্কোর এ কর্মসূচীর গুরুত্ব অপরিসীম।
বঙ্গবন্ধু’র ৭ মার্চ ভাষণের অর্ধশত বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু জনমানুষের কাছে এ ভাষণের প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি উচ্চারণ আজও প্রাসঙ্গিক। আমরা নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি, ৭ মার্চ দেখিনি, কিন্তু যখনই কানে বেজে উঠে-“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” তখনি আমরা শিহরিত হয়ে উঠি, রক্তে লাগে দোলা, আবেগ আপ্লুত মনে ফিরে যাই ৭১ এর সে উত্তাল দিনগুলোর কাছে। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর UNESCO তাঁদের Memmory of the world রেজিষ্টারে স্থান করে দেওয়ায় ৭ মার্চ এখন আর শুধু বাঙালীর নয়, সমগ্র বিশ্ববাসীর। পৃথিবীর ইতিহাসে যতদিন পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য সংগ্রাম চলমান থাকবে, ততদিন ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের মুক্তিকামী জনমানুষের অন্তরে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে ৭ মার্চের মহাকাব্যের স্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধার্ঘ্য।
লেখক : ইতিহাস বিষয়ক গবেষণাকর্মী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭ই মার্চের ভাষণ ও অজানা কিছু তথ্য
পরবর্তী নিবন্ধ৭ই মার্চের ভাষণ ও মহান স্বাধীনতার মহাকাব্য