মধ্যরাত থেকে সাগরে ২২ দিন মাছ ধরা নিষেধ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৬ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে আজ মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। ফলে প্রায় ৯৫% ট্রলারই ইতোমধ্যে ঘাটে ফিরেছে। বাকি ট্রলারগুলোও আজ বিকালের মধ্যে ফিরবে বলে আশা করছে ট্রলার মালিক সমিতি।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ জানান, কক্সবাজারে ছোট বড় প্রায় ৮ হাজার নৌ-যান আছে। এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮০% বোটই সাগর থেকে ফিরেছে। বাকিগুলো আজকের মধ্যে ফিরে আসবে। তবে ইলিশ জালের বোটগুলো মাছ ধরা বন্ধ করে সাগর থেকে ফিরে এলেও বিহিন্দি জালের বোটগুলো বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরবে এবং এসব মাছ স্থানীয় বাজারেই বিক্রি হবে বলে তিনি জানান। একইভাবে আজ ঘাটে ফেরা ট্রলারগুলোর ইলিশও স্থানীয় বাজারেই বিক্রি হবে বলে জানান কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২ থেকে মাছ ধরার পাশাপাশি পরিবহন ও সংরক্ষণের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। তাই সময়ের অভাবে এদিন ঘাটে ফেরা ট্রলারগুলোর ইলিশ রাজধানী ঢাকায় পাঠানো সম্ভব নয়। বুধবারই কক্সবাজার থেকে শেষবারের মতো মাত্র ১২ মেট্রিক টন ইলিশ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পৌনে একমাসের জন্য নির্জন প্রান্তরে পরিণত হতে চলেছে শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। বেকার হতে বসেছে প্রায় ১ লাখ মৎস্যজীবী। সেসাথে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বরফ কলগুলোও।
ট্রলার মালিক সমিতির জানায়, ইতোমধ্যে ঘাটে ফিরে আসা ট্রলারগুলো পোতাশ্রয়ে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আর কিছু ট্রলারকে পাঠানো হয়েছে ডকইয়ার্ডে।
কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, কক্সবাজারে আকার ভেদে একেকটি বড় নৌযানে ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌ-যানে ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। এরমধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে থাকে। যে কারণে ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগরে মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালে ইলিশ ব্যতীত ছোট আকারের প্রায় পাঁচ প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মাছধরা, পরিবহন ও মজুদের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপির আন্দোলনের রূপরেখা, গুরুত্ব দিচ্ছে না আ. লীগ
পরবর্তী নিবন্ধবেপরোয়া বাসের ধাক্কায়