বন্ধুত্বের দ্বীপ

রাদিয়া আফরীন নাশরাহ্‌ | বুধবার , ২০ জুলাই, ২০২২ at ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ

স্কার্লেট ও স্টিভ দুজনেই একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়ে।কিন্তু তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের চাইতে লড়াই বেশি। একদিন তাদের স্কুল থেকে ক্যাম্পেনিং এর জন্য এক জঙ্গলে আসে। সেখানে স্কার্লেট এবং স্টিভ ও যায়। সেখানে সারাটা দিন খুব আনন্দে কাটে বিভিন্ন রকমের গাছপালা বিভিন্ন প্রাণী আরও অনেক কিছু সবাই দেখতে পায় এবং অনেক মজার মজার খেলা খেলে সবার সারা দিন অনেক চমৎকার কাটে। রাতের খাবারের পর সবাই যার যার তাবুতে ঘুমাতে যায়।

কিন্তু স্কার্লেটের রাতে একদম ঘুম আসেনা প্রচন্ড খুশি এবং মশার কামড়ে।তার ইচ্ছা করছে তাবু থেকে বের হওয়ার জন্য। কিন্তু ভয়ে সে বের হয়না। এরপর ভোরের আলো ফোটার পর সে বের হয়। বের হওয়ার পর সে সেখানে স্টিভকে দেখতে পায়। স্কার্লেট বলে কীরে বানর মশাই আপনি এসময় এখানে কী করছেন?
স্টীভ বলে আমি বাকিদের মতো নই। আমি ভোরে ঘুম থেকে উঠি। এরই মাঝে তাদের মধ্যে কিছু কথা কাটাকাটি হয় এরপর স্কার্লেট বলে ওঠে -আমি তোমার চেয়েও অনেক দিকে সেরা যেমন দৌড় প্রতিযোগিতায় গতবার আমি প্রথম হয়েছি এবং তুমি দ্বিতীয়। আগের বার তুমি জিতেছো এবার পারবেনা। এরপর দুজনে ঠিক করে যে যত আগে যত দূরে যেতে পারবে সেই জিতবে।

তারপর তারা দৌঁড়াতে শুরু করে। দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে তারা অনেকদূরে একটি নদীর কাছে পৌঁছে। এরপর স্টীভ বলে দেখেছো আমি জিতেছি। প্রচন্ড হয়রান হয় দুজনেই। স্কার্লেট কোন উত্তর দেয়না, হঠাৎ তারা দেখতে পায় একটা ভালুক নদীর দিকে আসছে। তাদের পালাবার কোন পথ নেই। নদীতে একটি নৌকা দেখতে পায়।বাধ্য হয়ে তারা নৌকাটি নিয়ে যতদূরে সম্ভব পালালো।

নদীতে অনেক ঢেউ। তারা পথ হারিয়ে অনেক দূরে একটি দ্বীপে পৌঁছালো। সেখানে তারা নামলো, অনেক ভয় ভয় লাগছিলো তাদের সেই দ্বীপে।যদি হিংস্র বাঘ, ভালুক, সিংহ থাকে এবং তাদের খেয়ে ফেলে। কিন্তু সেখানে ঘুরে তারা হিংস্র কোন প্রাণী দেখতে পেলনা। সেখানে রয়েছে খরগোশ, হরিণ, হাতি, বানর ইত্যাদি প্রাণী যারা হিংস্র বা মাংসাশী নয়। তারা দেখলো একটি বানর আরেকটি হাতিকে গাছ থেকে কলা পেড়ে খাওয়াচ্ছে এবং নিজেও খাচ্ছে। সেখানকার পিপঁড়ারা সবাই একে অপরকে সাহায্য করছে। হরিণগুলো একসাথে মিলেমিশে ঘাস খাচ্ছে বন্ধু খরগোশকেও গাজর তুলে দিচ্ছে।

সেই দ্বীপে তাদের সারা দিন অনেক ভালো কাটলো। হঠাৎ তাদের মনে পড়লো সন্ধ্যা হয়ে যাবে এতক্ষণে ক্যাম্পে নিশ্চয়ই সবাই জেনে গেছে যে তারা নিখোঁজ এবং অন্ধকার হয়ে আসছে,আজকেই তাদের ফিরতে হবে। নাহলে কালযে সবাই ফিরে যাবে শহরে।

তাই তারা তীরে ফিরে গেলো। যদি কেউ আসে তাদের খুঁজতে। তারা হঠাৎ দেখতে পেল একটি আন্টি স্পিড বোটে করে সেদিকে আসছিলো তাঁর হারিয়ে যাওয়া নৌকার খোঁজে।তারা তাকে চিৎকার করে ডাকতে লাগলো।তিনি খুব অবাক হলেন তার নৌকাতে তাদের দেখে।তিনি বললেন এখানে একা কেন তোমরা ছোট বাচ্চারা?

তারা তাকে পুরো ঘটনা বুঝিয়ে বলল, এরপর তিনি স্পিড বোটে করে তাদের ক্যাম্পের সবার কাছে পৌঁছে দিলেন। শিক্ষকরা তাদের দুজনকে বকা দিলেন। পরে ক্ষমাও করে দিলেন।আনন্দ করতে এসে দুঃখ ভরা মুখ নিয়ে ফিরে যাবে তা হতে পারেনা।

এরপর থেকে স্কার্লেট এবং স্টীভ আগের মত আর ঝগড়া করেনা। দুজন এক সাথে খেলে, একে অপরকে সাহায্য করে।তারা বুঝতে পারে যে ঝগড়া,লড়াই এসব করে লাভ নেই বরং তারা নিজেরাই বিপদে পড়বে। তারথেকে মিলেমিশে সেই দ্বীপের সবার মত-বন্ধুর মত থাকাটা ভালো,এতে সুখ শান্তি সবকিছুই থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রবাহ
পরবর্তী নিবন্ধকথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ