প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে এমন খবর শুনে ঘর থেকে বের হয়ে লাশ হয়ে ফিরলো এক প্রেমিক। গত বুধবার রাতে উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড হাছনদন্ডি হাজিরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। তার নাম মো. পারভেজ (১৮)। পেশায় রাজমিস্ত্রি পারভেজ হাজিরপাড়ার মো. ফরিদের পুত্র। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় পারভেজ কাজ শেষে বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি আসে। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নের পর মায়ের হাতে বানানো চা খায়। পরে বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারে তার প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। খবর শুনে সে বন্ধুদের সাথে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু রাতে সে আর বাড়ি ফিরেনি। সকালে স্থানীয় গাছ বাগানে দড়ি দিয়ে বাঁধা একটি দোলনার সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে চন্দনাইশ থানার পুলিশ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।
পারভেজের মা বুলু আকতার জানান, দোহাজারী রায়জোয়ারা এলাকার মিলি নামে এক মেয়ের সঙ্গে তার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সন্ধ্যার পর মিলির বিয়ের কথা শুনে সে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। প্রেমিকার সঙ্গে তার প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। প্রেমঘটিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা তার। দাদী খাতিজা খাতুন জানান, সন্ধ্যার পর পারভেজের স্থানীয় কিছু বন্ধু মিলির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বলে নাতিকে ডেকে নিয়ে যায়। বড় ভাই ওমর ফারুক জানান, তাদের মধ্যে পারিবারিক কোনো সমস্যা ছিল না। পারভেজের সঙ্গে কারও বিরোধ ছিল বলেও শুনিনি। মেয়ে সম্পর্কিত বা বন্ধুদের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তার ধারণা।
এদিকে প্রেমিকা মিলির দাবি, প্রায় ছয় বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। মাঝে মাঝে একটু–আধটু মান–অভিমান হলেও পারভেজের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালোই ছিল। তারা দু’জন বিয়ে করার প্রতিজ্ঞা করেছিল। বর্তমানে তার বয়স ১৬ বছর। সুতরাং এখন অন্য কোথাও তার বিয়ের প্রশ্নই আসে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মিলির বাড়িতে গিয়েও বিয়ের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, উদ্ধারকৃত লাশের গলায় নাইলনের দড়ির দাগ রয়েছে। শরীরের আর কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য মরদেহ চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
