মেলবোর্নে পেস বোলারদের জমজমাট লড়াই হলো। আর সে লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়টা স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ারই। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গতকাল সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০৪ রানের লক্ষ্য ৯৯ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে কামিন্সের দল। রান তাড়ার ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ছোট জয়। পেসারদের দাপটের ম্যাচে বল হাতে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৩২ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেন কামিন্স। তবে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে কাঁপন ধরিয়ে দশ ওভারে তিন মেইডেনসহ মাত্র ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা মিচেল স্টার্ক। ম্যাচে ফিফটি করতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান। দুই দলের দুজন করে ছুঁতে পারেন চল্লিশ। ম্যাচের ১৮ উইকেটের মধ্যে ১৩টিই নেন পেসাররা। ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে কিছুটা আশা দিলেও ৯ ওভারে ৬৭ রান খরচ করে ফেলেন রউফ। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই স্টার্কের তোপে পড়ে পাকিস্তান। তৃতীয় ওভারে বোল্ড হন অভিষিক্ত সাইম আইয়ুব। সপ্তম ওভারে স্টার্কের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারির লেংথ পড়তে ভুল করেন আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ শাফিক। ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টায় শেষ মুহূর্তে তার ব্যাটে লেগে বল চলে যায় জশ ইংলিসের গ্লাভসে। নতুন অধিনায়ককে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম। দুজন মিলে ৬৬ বলে যোগ করেন ৩৯ রান। ১৮তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। বোল্ড হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেন ৪টি চারের সাহায্যে ৪৪ বলে ৩৭ রান করা বাবর। এরপর আর তেমন জুটি গড়ে ওঠেনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটিংয়ে নেমে অল্পেই ফিরেন কামরান গুলাম। দলকে একশ পার করিয়ে পাঁচ ওভারের মধ্যে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন অধিনায়ক রিজওয়ান ও সহ–অধিনায়ক সালমান আলি আগা। দলের সর্বোচ্চ ৪৪ রান করতে ৭১ বল খেলেন রিজওয়ান। সালমানের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। আরেক অভিষিক্ত ইরফান খান রান আউট হন ২২ রান করে। ভালো শুরু করেও ১৯ বলে ২৪ রানে ফিরে যান শাহিন শাহ আফ্রিদি। পরে দলকে দুইশ পার করান নাসিম শাহ। অ্যাডাম জ্যাম্পার ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে নেন ১৮ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ১ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কায় ৩৯ বলে তিনি করেন ক্যারিয়ার সেরা ৪০ রান।
২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হতাশ করে অস্ট্রেলিয়ার নতুন উদ্বোধনী জুটি। চার ওভারে ড্রেসিং রুমে ফিরেন দুই ওপেনার। ম্যাথু শর্টকে ফেরান আফ্রিদি। আর নাসিমের শিকার হন জেইক–ফ্রেজার ম্যাকগার্ক। শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে দারুণভাবে এগিয়ে নেন স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিস। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করতে থাকেন তারা। দুজনের জুটিতে ৭৫ বলে আসে ৮৫ রান। ১৩তম ওভারে আক্রমণে এসে নিজের তৃতীয় ওভারে এই জুটি ভাঙেন রউফ। কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন ৬ চারে ৪৪ রান করা স্মিথ। আরেক সেট ব্যাটসম্যান ইংলিসকে ফেরান আফ্রিদি। বাঁহাতি পেসারের শর্ট বলে প্রথমে ছক্কা মারেন উইকেটরক্ষক–ব্যাটসম্যান। পরের বল একই শট খেলার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন তিনি। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ বলে ম্যাচের সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন ইংলিস। ২১তম ওভারে পরপর দুই বলে মার্নাস লাবুশেন ও গ্লেন ম্যাঙওয়েলকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান রউফ।