পাখিটি মারাই গেল

মহেশখালী প্রতিনিধি | বুধবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ

পিঠে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস নিয়ে বাংলাদেশ থেকে সুদূর রাশিয়ার তাজিকিস্তান ও সাইবেরিয়া অঞ্চল ঘুরে ভারত, নেপাল ও চীন হয়ে অবশেষে স্বদেশ ভূমি বাংলাদেশে এসে প্রাণ হারালো পাখিটি। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে মহেশখালীতে উপকূলীয় বন বিভাগের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ক্লান্ত ও অসুস্থ পাখিটি মারা গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নে পিঠে রহস্যজনক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যুক্ত একটি পাখি উদ্ধার নিয়ে স্থানীয় জনমনে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টায় ধলঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান পাখিটি বন বিভাগের কর্মীদের নিকট হস্তান্তর করেন।
উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, সোমবার দিবাগত রাত ২টায় উদ্ধারকৃত পাখিটি মারা গেছে। তিনি জানান, পাখিটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর দিলীপ কুমার দাসের গবেষণার কাজে ব্যবহৃত। এর নাম ব্ল্যাক টেইল গডউইথ (কালো লেজ জৌরালী)। পাখিটির গায়ে যে যন্ত্রটি রয়েছে তা স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার। মূলত বিপন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি নিয়ে বার্ড মাইগ্রেশন বিষয়ে গবেষণার কাজে লোকেশন জানার জন্য এ যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়েছে। পাখিটি উদ্ধারের খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাতেই একজনকে পাঠানো হলেও পৌঁছার আগেই পাখিটি মারা যায়।
এদিকে উদ্ধারকৃত পাখিটির মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল মহেশখালীতে পরিদর্শনে যান আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার একদল প্রতিনিধি। দলটির প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, উদ্ধার হওয়া এই পাখিটি বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সুদূর রাশিয়ার তাজিকিস্তান ও সাইবেরিয়া অঞ্চলে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে শীত মৌসুমের শুরুতে ভারত, নেপাল ও চীন হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে চলে এসেছে। সম্ভবত এ ধরনের পাখিগুলো প্রচণ্ড বজ্রপাতের শব্দে আহত ও দুর্বল হয়ে পড়ে অথবা পিঠে বহনকৃত ডিভাইসের কারণে দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ কারণে পাখিটির মৃত্যু হতে পারে। তিনি আরো জানান, পাখিটি বর্তমানে বন বিভাগের হেফাজতে ফ্রিজারে সংরক্ষিত রয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যাবে পাখিটির আসল মৃত্যুর রহস্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুরু হচ্ছে ফিজিবিলিটি স্টাডি
পরবর্তী নিবন্ধকানাডায় পাড়ি জমালেন মুহিবুল্লাহর পরিবারের আরও ১৪ জন