চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি চরমে

আজাদী অনলাইন | রবিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৩:৩৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ ৪ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

এতে সকাল থেকে এসব পথে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাস্তায় পরিবহন না থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন জায়গায় যেতে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে।

চুয়েটে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদসহ ৪ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে চট্টগ্রামে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা এই অবরোধ শুরু হয়েছে আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে।

একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে গাড়ি সংকটের জন্য ক্ষোভ ঝেড়েছেন সাধারণ মানুষ। অবশ্য পিকআপ-সিএনজি-টেম্পো ও পণ্য পরিবহন মালিক-চালক ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ অটোরিকশা হালকা যান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘট প্রত্যাখ্যান করায় চলছে কিছু যানবাহন।

সকালে নগরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, গণপরিবহন সংকটের কারণে টেম্পুতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ।

আগুন ঝরা রোদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাচ্ছেন না যাত্রীরা। অনেককে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

নগরের মুরাদপুর, চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, অক্সিজেন, নিউমার্কেট, জিইসি, অলঙ্কার মোড়, টাইগারপাসসহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র গরমের মধ্যে গাড়ি না পেয়ে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম। এ ছাড়া তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাগামী রুটেও বাস চলাচল বন্ধ আছে।

এই পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন গন্তব্যমুখী মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।

আজ অনেক দিন পর স্কুল, কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সময় মতো যেতে পারেননি।

ধর্মঘটে বারইয়ারহাট বাসস্ট্যান্ড, চট্টগ্রাম নগরীর মাদারবাড়ি ও কোতয়ালী বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে মহাসড়কে চলাচল করা লেগুনা ও সেইফ লাইন পরিবহনের গাড়িও।

স্কুলশিক্ষক আমেনা জান্নাত জানান, প্রায় ১ মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে স্কুল খোলা। সকালে রাস্তায় দেখি কোনো বাস চলছে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করতে হয়েছে।

যেখানে আমার ভাড়া লাগে ৪০ টাকা, এখন ভাড়া গুণতে হয়েছে ২০০ টাকা। কক্সবাজারে পরিবহন ধর্মঘটের কবলে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে বাস বন্ধ থাকায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা প্রাইভেট কার করে গন্তব্যের দিকে ছুটছেন। স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া।

জুবায়ের আলম নামে এক পর্যটক বলেন, আজ অফিস খোলা। গতকাল থেকে বাস কাউন্টারে টিকিট বিক্রি বন্ধ। সকাল থেকে কক্সবাজার টার্মিনালে গিয়ে টিকিট চাইলে তারা বলছে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে গাড়ি বন্ধ আছে। কি করব বুঝতে পারছি না।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সিফাত আহমেদ বলেন, আজ চট্টগ্রাম ফিরতে হচ্ছে। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ। এখন ছোট গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সিন্ধান্ত নিচ্ছি। তবে ছোট গাড়ির ভাড়া বেশি চাই।

কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা এহসান বলেন, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আমরা কেন্দ্রের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছি।

আজ বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পরিবহন নেতাদের সাথে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।  বৈঠক শেষে ধর্মঘটের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহেশখালীতে আগুনে পুড়ে ছাই ৮ একর পাহাড়ি বন
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে উপনির্বাচনে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া