তুমব্রু গ্রামে শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের চাপ

প্রাইমারি স্কুলটিতে কমে গেছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি

নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৪:৫২ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু গ্রামে শূন্যরেখা থেকে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা চাপে পড়েছেন। এছাড়া তুমব্রু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। গতকাল পৃথকভাবে তারা এ উদ্বেগের কথা জানান। এদের মধ্যে রয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল বশর, বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ঘুমধুমের বাসিন্দা রাজা মিয়া ও তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রাজা মিয়া বলেন, ৬ দিন অতিবাহিত হয়েছে। সোয়া ৪ হাজার রোহিঙ্গা এখনো তুমব্রু গ্রামে অবস্থান করছে। তারা অপরিকল্পিতভাবে বসত গড়েছে। খোলা জায়গায় যত্রতত্র পায়খানাপ্রস্রাব করছে। সর্বত্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। ছোট্ট এই গ্রামে এত রোহিঙ্গার বসবাস কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া মাদকাসক্ত রোহিঙ্গারা ‘ঝামেলা’ করছেন বলে জানান তিনি। সাবেক চেয়ারম্যান খায়রুল বশর বলেন, রোহিঙ্গারা তুমব্রুর পরিবেশ নষ্ট করছে। বিশেষ করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে নিবেদন, এসব রোহিঙ্গাকে দ্রুত অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়া হোক।

বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, তুমব্রু গ্রামের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তুমব্রু প্রাথমিক বিদ্যালয়। অনিরাপদ মনে করায় অনেক অভিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। এভাবে চলতে থাকলে পড়ালেখার ক্ষতি হবে।

তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম বলেন, আমার স্কুলে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৬২ জন। রোববার শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ছিল ২শ জন। পরের দিন সোমবার উপস্থিতি ছিল ৩শ জন। তবে জাতীয় কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ার দিন থাকায় গতকাল ৪৯০ জন শিক্ষার্থী স্কুলে আসে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষে এত রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চাচ্ছে না। এতে শিক্ষার মারাত্মক ক্ষতি হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এদিকে গতকাল দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে উপজেলা আইনশৃক্সখলা কমিটির সভায় কয়েকজন সদস্য তুমব্রু গ্রামে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা বলেন, দুটো বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। একটি রাষ্ট্রীয়, অপরটি শিশু শিক্ষার্থীর স্বার্থ। উচ্চ মহলে আলোচনা করে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের সরাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) গতকাল রোহিঙ্গাদের মাঝে শুকনো খাবার ও কম্বল বিতরণ করেছে। প্রসঙ্গত, শূন্যরেখায় আগুন ও গোলাগুলির পর এসব রোহিঙ্গা তুমব্রু গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল আজ
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার