ডিবির ৭ সদস্যের কারাদণ্ড

কক্সবাজারে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়

কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি | বুধবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৫:০৮ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের সাত বরখাস্ত সদস্যকে ৭ ও ৫ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইসমাঈল এই রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান ও আবুল কালাম আজাদ, এএসআই ফিরোজ, গোলাম মোস্তফা ও আলাউদ্দিন এবং দুই কনস্টেবল আল আমিন ও মোস্তফা আজম। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ফরিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ রায় হলো। আমরা সন্তুষ্ট।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি কক্সবাজার সদর থানার পেছনের রোড থেকে টেকনাফের ব্যবসায়ী আবদুল গফুরকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। এরপর তারা ওই ব্যবসায়ীকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার স্বজনদের কাছে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ব্যবসায়ীর পরিবার ধারদেনা করে কোনোমতে ১৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে সক্ষম হয়। এ টাকা হাতে পাওয়ার পরদিন ভোরে আবদুল গফুরকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি গফুরের স্বজনেরা সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকিতে অবহিত করলে সেখানে দায়িত্বরত সেনাসদস্যরা ডিবি পুলিশের সদস্যদের বহন করা মাইক্রোবাসটি তল্লাশি করে সেখানে ১৭ লাখ টাকা পায়। তল্লাশিকালে ডিবির এসআই মনিরুজ্জামান দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকি ছয়জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে সেনা সদস্যরা। পরে তাদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় ব্যবসায়ী আবদুল গফুর বাদী হয়ে ডিবি পুলিশের ৭ সদস্যের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ব্যবসায়ী আবদুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করায় আমাদের পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আসামিরা টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করেছে। এসব নির্যাতন আর হয়রানিতে আমার ভাই আব্দুল গফুর মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধইভিএমেই নির্বাচন কর্ণফুলী উপজেলা ও ফটিকছড়ি পৌরসভায় ভোট ২ নভেম্বর