কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহর চিরিঙ্গার একটি আবাসিক হোটেল থেকে মো. মহিউদ্দিন (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে থানা পুলিশ হোটেলের দরজা ভেঙে লাশটি উদ্ধার করে। এ সময় একটি চিরকুট এবং একটি বিষের বোতলও উদ্ধার করা হয়। মহিউদ্দিন রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের জুমছড়ি এলাকার পেয়ার মোহাম্মদের ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, হোটেল কক্ষ থেকে লাশ উদ্ধারের সময় বিছানায় হাতে লেখা একটি চিরকুট এবং বিষের বোতল পাওয়া যায়। সেই চিরকুটে দুই বন্ধুর নাম উল্লেখ করে আত্মহত্যার জন্য তাদেরকে দায়ী করা হয়। চিরকুটে চট্টগ্রামে ভাড়া বাসা থেকে দুই বন্ধু কৌশলে তার ২ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এদিকে মহিউদ্দিনের বড় বোন শাহজাদা বেগম বলেন, আমার ভাই বাসের হেলপার ছিল। গত বৃহস্পতিবার সে চট্টগ্রামের ভাড়া বাসা থেকে বের হয়। বাসা থেকে তার ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দুই বন্ধু হাতিয়ে নেওয়ায় সেই টাকা উদ্ধারের জন্য চকরিয়ায় এসেছিল। তবে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ফোনে জানিয়েছিল আমাকে। তিনি আরো জানান, এই ঘটনায় নিখোঁজ ভাইয়ের দুই বন্ধু চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের মোজাহের পাড়ার আবদুল করিম ও মো. ইছমাইলের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয় শুক্রবার। এরপর হারবাং ফাঁড়ির পুলিশ দুই বন্ধুকে আটক করে।
লাশ উদ্ধারে যাওয়া চকরিয়া থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুল ইসলাম জানান, পৌরশহর চিরিঙ্গার একটি আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার থানায় গিয়ে বলেন যে, হোটেলের একটি কক্ষ ভাড়া নেওয়া মহিউদ্দিন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রুম ছাড়ার কথা। কিন্তু এরপর থেকে দরজায় গিয়ে বারবার ডাকা হলেও কোনো সাড়া দিচ্ছেন না। এই খবর পাওয়ার পর পুলিশ সেখানে গিয়ে রুমের দরজা ভেঙে ভেতর থেকে মহিউদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে। তখন তার মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। এ সময় হাতে লেখা একটি চিরকুট ও একটি বিষের বোতল পাওয়া যায়। তিনি আরো জানান, উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মহিউদ্দিনের লাশ কঙবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ আবাসিক হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। কক্ষটিতে আর কেউ প্রবেশ করেছিল কীনা তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ওসি বলেন, মহিউদ্দিনের কাছ থেকে টাকা হাতানোর বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আটককৃত দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে রেখে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।