কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের ভিড়

তিন দিনের ছুটি

রামু ও কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ

টানা তিনদিনের ছুটিতে দেশের প্রধান অবকাশযাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে এখন ভিড় করছে লাখো পর্যটক। পর্যটকদের ভিড়ে শহরের রাস্তাঘাট, সমুদ্র সৈকত, বিপণীকেন্দ্র ছাড়াও শহরের বাইরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোও এখন জমজমাট। হোটেলমোটেলগুলোও শনিবার পর্যন্ত প্রায় হাউসফুল বলে জানান হোটেল মালিকরা। এরই মধ্যে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে গত বুধবার থেকে সৈকতের লাবণি পয়েন্টে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভালের আয়োজন করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। পর্যটন মৌসুমের শুরুতে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে মেলা চলাকালীন থাকাখাওয়া, যাতায়াত ও বিনোদনসহ অন্তত ১৫টি খাতে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পর্যটকদের জন্যে টেকনাফসেন্টমার্টিন নৌ রুটে চালু করা হয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ। মেলাকে ঘিরে কক্সবাজার শহরকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে।

তবে পর্যটকদের অভিযোগ জেলা প্রশাসনের এ নির্দেশনা সংশ্লিষ্টরা মানছে না। অধিকাংশ হোটেলমোটেল ও গেস্ট হাউসে ছাড় তো দূরের কথা আরও অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন তারা। অবশ্য শহরের তারকা মানের হোটেলগুলো ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে বলে জানা গেছে।

হোটেল মালিকরা জানান, প্রতিবছর দুই ঈদ এবং থার্টিফার্স্ট’র ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেলমোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। তবে বছরের অন্যান্য সময়ে টানা ৩ দিন বা তার বেশি সময় সরকারি ছুটি পড়লেও প্রায় একই অবস্থা হয়। বর্তমানে কক্সবাজার শহরের ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও কটেজে প্রায় দেড় লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুবিধা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সমুদ্রসৈকতের তিন কিলোমিটার এলাকায় সাজ সাজ রব। লাবণী পয়েন্ট সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। এখানে সৈকতে নামার ফটকে মেলা ও বিচ কার্নিভাল উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। মঞ্চের সামনে সড়কের দুই পাশে সারি সারি স্টল। সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত মেলায় ঘোরাঘুরি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ রয়েছে।

এছাড়া পর্যটকরা কক্সবাজার শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে যাচ্ছেন দরিয়া নগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন। কেউ কেউ ছুটছেন মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়া, রামুর বৌদ্ধ পল্লী, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ জেলা ও কক্সবাজার সন্নিহিত বান্দরবান জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী সুপারভাইজার মাহবুব আলম জানান, শুক্রবার বিকেলে শহরের লাবণি, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট সৈকতে প্রায় ১ লাখ পর্যটক সময় কাটান।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক কবিরুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার আসেন তিনি। শহরের সুগন্ধা মোড়ের একটি হোটেলে উঠেছেন। তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষে হোটেল মোটেলে বিশেষ ছাড় চলছে, গণমাধ্যমে এমন সংবাদ দেখে কক্সবাজার আসি। কিন্তু এসে দেখি বিপরীত। গত বছর আড়াই হাজারে যে হোটেলে থেকেছি, সেখানে এবার নিল সাড়ে তিন হাজার টাকা। যোগ করেন তিনি। একই অভিযোগ করেন সিলেট থেকে আসা পর্যটক মো. কামাল মিয়া এবং চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে আসা পর্যটক সালাউদ্দিন আহমদ শেলী ও সোহরাব হোসেন রতন।

কক্ষ ভাড়ায় ছাড় না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কলাতলী হোটেলমোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু হোটেলমোটেলের মালিক হয়তো এ কাজ করেছে। মূলত ৬ মাস ধরেই ছাড় চলছে। এখন লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেলগুলোর সব কক্ষ বুকিং হওয়ায় কেউ কেউ এ সুযোগে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, অনেকের কাছে ছাড় না দেওয়ার অভিযোগ শুনেছি এবং শুক্রবার অনেকে হোটেল মোটেলে অভিযানও চালানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখোদাভীতি ও রাসুলের (দ.) জীবনাদর্শ অনুশীলনেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব
পরবর্তী নিবন্ধনিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন আর ভয় দেখান ফখরুল : কাদের