রাশিয়ার দিকে হেলে থাকা একটি শান্তি প্রস্তাব সংশোধনে ইউক্রেন–যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় নেতারা। খবর বিডিনিউজের। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন আলোচনা নিয়ে ক্রেমলিনকে জানাতে মস্কো যাচ্ছেন ওয়াশিংটনের দূত স্টিভ উইটকফ। সোমবার প্যারিসে জেলেনস্কিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। পরে দুজন যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ডজনের বেশি শীর্ষ ইউরোপীয় নেতার সঙ্গে ফোনালাপে যুক্ত হন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওই বৈঠকের পর মাক্রোঁকে নিয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, শান্তি আলোচনায় কিইভ সার্বভৌমত্ব বজায় রাখা ও দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। আর ভূখণ্ড নিয়ে মতবিরোধের জটিলতা এখনও কাটেনি।
রাশিয়াকে যেন তাদের শুরু করা যুদ্ধের জন্য পুরস্কৃত করা না হয় তা নিশ্চিতে ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন বিশেষ দূত উইটকফের রাশিয়া সফরের পরপরই তিনি ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বসার সুযোগ পাবেন বলেও আশা জেলেনস্কির। মাক্রোঁ সাংবাদিকদের বলেছেন, শান্তি আলোচনায় ভূখণ্ড ছাড় বিষয়ক সিদ্ধান্ত কেবল ইউক্রেনই নিতে পারে। ফরাসী এ প্রেসিডেন্ট পরে ইউক্রেন নিয়ে ফোনে ট্রাম্পের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে জানিয়েছে এলিসি প্রাসাদ। তারা ইউক্রেনে টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন, বলেছে তারা।
ফোনে মাক্রোঁ ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা যে খুবই প্রয়োজনীয় তার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, বলেছে এলিসি প্রাসাদ। এর আগে জেলেনস্কি স্পষ্ট করে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার যুদ্ধকালীন মূল দাবিগুলোকে মেনে নেওয়া প্রস্তাবিত মার্কিন পরিকল্পনার সংশোধনী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন দুই দফা আলোচনা হওয়ার পরও প্রস্তাব চূড়ান্ত করা যায়নি। এখনও কিছু জটিল ইস্যু রয়ে গেছে, যা নিয়ে কাজ করতে হবে, ট্রাম্প অনুসারী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী উইটকফের বানানো ফ্লোরিডার বিলাসবহুল গলফ রিসোর্টে রোববারের যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন আলোচনার পর দেওয়া পোস্টে বলেছিলেন জেলেনস্কি। মস্কো রওনা হতে উইটকফ ওই আলোচনা ছাড়েন। রাশিয়ার তার সঙ্গে মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দেখা হওয়ার কথা।
এ সফরে উইটকফের সঙ্গে ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও জামাতা জারেড কুশনারও থাকছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। ওয়াশিংটন সপ্তাহ দুয়েক আগে কিয়েভকে তার যে ২৮ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছিল, তার কোথায় কোথায় কী কী পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখলের বাইরে আরও ভূখণ্ড ছাড়তে, সেনাবাহিনীর আকার কমাতে, নেটোতে যোগ দেওয়া কিংবা ইউক্রেনে পশ্চিমা সেনা রাখার আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
কিয়েভ এসব শর্তকে আত্মসমর্পণ হিসেবেই দেখছে। বলছে, এমন ক্ষেত্রে রাশিয়া তাদের ওপর ফের চড়াও হওয়ার সুযোগ পাবে। মিয়ামির কাছে উইটকফের শেল বে ক্লাবে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন এ দফা আলোচনার আয়োজক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রোববার বলেছেন, শান্তি আলোচনা যে কত জটিল সে বিষয়ে ওয়াশিংটন বাস্তববাদী এবং একইসঙ্গে আশাবাদীও, বিশেষ করে আমরা যেহেতু বেশ খানিকটা এগিয়েছি। আরও কাছ বাকি আছে।












