ইউক্রেনকে এবার দূরপাল্লার অস্ত্র দিচ্ছে ন্যাটো

| সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের আশীর্বাদ সঙ্গী করে কিইভকে সোভিয়েত আমলের একটি এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট পাঠাতে স্লোভাকিয়ার রাজি হওয়া, ইউক্রেইন যুদ্ধ যে নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে তা সবার সামনে দৃশ্যমান করল। কিইভের মিত্ররা এখন নতুন করে কেন্দ্রীভূত হওয়া রুশ বাহিনীর আসন্ন হামলা মোকাবেলায় এবং সম্ভাব্য দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় সাহায্য পাঠানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।
রুশ হামলার শুরুর দিকে নেটো দেশগুলো ইউক্রেনকে তাৎক্ষণিকভাবে স্বল্প পাল্লার, ট্যাংক ও বিমানবিধ্বংসী প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র পাঠিয়েছিল, যার মধ্যে জেভেলিন, এনএলডব্লিউ ও স্টিনজার ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল। এগুলো হালকা, সহজে বহনযোগ্য, প্রযুক্তিনির্ভর এবং সামান্য প্রশিক্ষণেই ব্যবহার করা সম্ভব।
কিন্তু এখন মিত্র সরকারগুলো ট্যাংক ও এস-৩০০ এর মতো ভারি অস্ত্রশস্ত্র পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছে, এসব অস্ত্র দনবাসে আসন্ন যুদ্ধে কাজে লাগবে বলেই মনে করছে তারা। রাশিয়ার বানানো ভূমি থেকে আকাশে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এস-৩০০ মূলত শত্রু বিমানকে ধরাশায়ী করতে ব্যবহৃত হয়। মাঠের বাস্তব পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আমাদের সিদ্ধান্ত ঠিক হচ্ছে, কূটনৈতিক আলোচনার জন্য কয়েকদিন আগেই ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে এমনটা বলেছিলেন লিথুয়ানিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারগিরিস আবুকেভিসিয়াস।
শনিবার যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে ১২০টি সাঁজোয়া যান এবং নতুন জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে। আগের দিনই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইউক্রেনকে ১৩ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। সাঁজোয়া যান ও জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা তার সঙ্গে যুক্ত হল। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, কোনো পক্ষই লড়ার মানসিকতা ত্যাগ না করায় দুই বৃহৎ সেনাবাহিনীর সংঘাত দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে-পশ্চিমা কর্মকর্তাদের এমন অনুমান দিন দিন আরও পোক্ত হচ্ছে। এ কারণেই ইউক্রেনের অস্ত্রের চাহিদাও বদলাচ্ছে।
কিয়েভ বাহিনীর কমান্ডাররা এখন ইউক্রেনের পূর্বে অবস্থিত বিপুল সংখ্যক সেনার সুরক্ষায় তাদের হাতে যেসব অস্ত্র আছে, তার চেয়ে ভালো আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দূরপাল্লার অস্ত্র চাইছেন। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে এমন কোনো অস্ত্র দিতে রাজি হয়নি, যা দিয়ে রাশিয়ার ওপর ব্যাপক আঘাত হানা সম্ভব। অনেক সমর বিশ্লেষকই বলছেন, রুশ সামরিক বিমান ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতি মস্কোর নতুন আক্রমণ মোকাবেলায় ইউক্রেনের সক্ষমতা বাড়াতে পারে। কয়েকদিন আগে জো বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল, তারা দনবাসে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রতিরক্ষা জোরদারে সেখানে সোভিয়েত আমলে নির্মিত ট্যাংক পাঠাতে মার্কিন মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বারবারই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের কাছে ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান চেয়ে যাচ্ছেন। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ওয়ারশ প্যাক্টে থাকা দেশগুলোতে সোভিয়েতের যেসব অস্ত্র মোতায়েন করা ছিল, ইউক্রেনের বাহিনী সেগুলো চালাতে বেশি পারদর্শী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন আর্মি জেনারেল নিয়োগ পুতিনের
পরবর্তী নিবন্ধরাশেদ রউফ-এর অন্ত্যমিল