আমরা তোমাদের ভুলবো না

শাহিদা আয়েশা | বৃহস্পতিবার , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজ বেনিয়াদের হাতে পরাজিত হন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা। সেই সাথে অস্তমিত হয়েছিল বাংলার স্বাধীনতা সূর্য। এরপর সুদীর্ঘ প্রায় দু’শ বছরের বৃটিশ শাসন আর শোষণ। মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় ঘটে নানা আন্দোলন বিপ্লব। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে বিভক্ত উপমহাদেশে বৃটিশ শাসনের অবসান ঘটে, জন্ম হয় ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের। পূর্ব বাংলা পূর্ব পাকিস্তান নাম নিয়ে যুক্ত হয় পাকিস্তানের সাথে। শুরু হয় শাসনের নামে শোষণের নতুন অধ্যায়। প ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহিদদের আত্মদানের মধ্য দিয়ে মাতৃভাষা বাংলা রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি পায়। এরপর ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০-এর সিঁড়ি বেয়ে আসে রক্তাক্ত ৭১’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে উঠেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ কাঁপিয়ে দেয় ইয়াহিয়ার সিংহাসন। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার এবং ‘অপারেশন সার্চলাইট’-এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানিরা শুরু করে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ। ন’মাস ধরে বয়ে চলে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। এই যুদ্ধে বাংলার আপামর জনতা-পুলিশ, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, মজুর, সৈনিক সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতার মরণপণ লড়াইয়ে। একটি প্রশিক্ষিত, সুসজ্জিত, সুশৃঙ্খল ও সশস্ত্র সেনাবাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে লড়তে যাওয়া খুব একটা সহজ কাজ ছিলো না। আমাদের দু’লাখ মা বোন হারিয়েছেন তাদের সম্ভ্রম। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই পুরোটা সময় সমর্থন, আশ্রয়, অস্ত্র, প্রশিক্ষণ, সর্বোপরি সেনাবাহিনী দিয়ে সহযোগিতা করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত। অবশেষে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত, ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১। জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। লক্ষ লক্ষ নারী-পুরুষ-শিশুর রক্তে ভেজা আমাদের এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে তোমাদেরকে কৃতজ্ঞ চিত্তে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। আমরা তোমাদের ভুলবো না।
লেখক : শিক্ষক

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিজয় দিবস : বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার দিন
পরবর্তী নিবন্ধস্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে