আপনার বাবা–মায়ের পরে আপনার আপন যদি কেউ থেকে থাকে, তিনি আপনার ‘স্ত্রী‘। আপনার বাবা–মায়ের পরে কেউ যদি আপনাকে বেশী ভালোবেসে থাকে, তিনি আপনার ‘স্ত্রী‘। আপনার বাবা–মায়ের পরে আপনার সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী যদি কেউ থেকে থাকে, তিনি আপনার ‘স্ত্রী‘।
…এতক্ষণ যে কথাগুলো বললাম এগুলো চিরন্তন। ধ্রুব সত্য। এই সত্য আপনি যত তাড়াতাড়ি মেনে নিতে পারবেন, আপনার জন্য ততই মঙ্গল।
আপনারা অনেকে হয়ত একটুখানি দ্বন্দ্বে পড়ে গেছেন… হঠাৎ আমি ‘স্ত্রী’ কূলের বন্দনা করছি কেন! আসলে বন্দনা করছি না। শুধু আপনাদের চোখের উপর জনম জনম ধরে পড়ে থাকা তথাকথিত পৌরুষত্বের মোটা পর্দাটা সরাবার চেষ্টা করছি মাত্র। যা দিয়ে আমরা অনেকেই স্ত্রীর উপর নিজের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করি। একবার ভালো করে চোখ মেলে আপনার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে দেখুন। এই সেই নারী… যে শুধু আপনাকে ভালোবেসে, আপনার চোখে আগামী দিনের স্বপ্ন দেখে নতুন একটা পৃথিবী গড়বে বলে আপনার হাত ধরে পথচলা শুরু করেছিলো। তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো আপনার সংসার, সন্তান, আপনার বাবা–মা, ভাই–বোন আর আপনার টেক কেয়ার করার কাজে ব্যয় করেছে। আপনার হাসিতে হেসেছে, বেদনায় সমব্যথী হয়েছে। আপনার প্রতিটি ভালো–মন্দ, জয়–পরাজয়ে যে ছায়ার মতো আপনার পাশে ছিলো নিরন্তর… সেই স্ত্রীর টেক কেয়ার কতটুকু করেছেন আপনি? কতবার তাকে এই ফিলিংস দিয়েছেন যে…ইয়েস, ইউ আর স্পেশাল? কখনো কি তাকে বলেছেন…তুমি আছো বলে আজ আমি পরিপূর্ণ?
আপনি সবসময় আশা করেছেন, আপনার স্ত্রী মন দিয়ে আপনার বাবা–মায়ের সেবা করুক। দু‘একটা ব্যতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ স্ত্রী আন্তরিকভাবেই তার শ্বশুর–শাশুড়ির সেবাযত্ন করে। কিন্তু আপনার শ্বশুর–শাশুড়ির সেবাযত্নে আপনি কি করেছেন বলবেন কি?
কী করেছেন আপনি তার বাবা–মায়ের জন্য, যারা তাদের সাত–রাজার ধন, বুকের মানিককে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন? তাদের টেক কেয়ার কতটুকু করেছেন আপনি?
কী! আমার প্রশ্নগুলো আপনাকে বিব্রত করছে? আপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি একজন মটিভেশনাল স্পীকার হিসেবে একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি, আর তা হলো… অধিকাংশ সফল মানুষের সফলতার নেপথ্য কারিগর হচ্ছে তার ‘স্ত্রী’। যারা উদারমনা মানুষ, তারা বিনয়ের সাথে তাদের জীবনে স্ত্রীর অবদানের কথা স্বীকার করেন।
একমাত্র স্ত্রীই হতে পারে একজন সফল মানুষের সবচেয়ে বড় মটিভেশনাল টুলস। আমার দৃষ্টিতে, পুরুষের জীবনে ‘স্ত্রী‘ হচ্ছে গ্রষ্টার দেয়া অমূল্য এক উপহার। একে অবহেলা করবেন না। তার জীবনটা নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দিন। সম্মান, বিশ্বাস আর ভালোবাসায় ভরিয়ে দিন।
আমি বাজি রেখে বলতে পারি, আপনি ঠকবেন না। দিনশেষে আপনিই জিতবেন। কারণ, একজন স্ত্রী যদি স্বামীর অকুণ্ঠ ভালোবাসা পায়, সে তা দ্বিগুণ বেশী করে তার স্বামী ও তার পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়। মনে রাখবেন, আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসা দেন, বিনিময়ে দ্বিগুণ ভালোবাসা পাবেন। যদি ঘৃণা দেন, বিনিময়ে দ্বিগুণ ঘৃণা পাবেন। যদি অবহেলা দেন, বিনিময়ে দ্বিগুণ অবহেলা পাবেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি কোনটা চান? সিদ্ধান্ত আপনার ! বিশেষ নোট– এই লেখাটা সব পুরুষের জন্য নয়, কিছু পুরুষের জন্য।