পরিবেশবাদী প্রধানমন্ত্রী! দেশ বাঁচাতে কর্ণফুলী রক্ষা করুন

দিলরুবা খানম | বুধবার , ১৩ মার্চ, ২০২৪ at ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একমাত্র আপনিই পারেন চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের অস্তিত্ব কর্ণফুলী রক্ষা করতে। বাংলাদেশের অর্থনীতির ৮২ শতাংশ এই কর্ণফুলীর মাধ্যমে। এস আলম ফ্যাক্টরিতে যে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনা তাতে আমরা মর্মাহত। কিন্তু ফ্যাক্টরির বিষাক্ত রসায়নিক দ্রব্য এভাবে নির্বিবাদে ফেলা হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। টনে টনে মরছে মাছ। মৃত্যুর মুখে চট্টগ্রামের হৃৎপিণ্ড কর্ণফুলী। সেই সাথে ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ গিয়ে পড়ছে হালদা নদীতে। ভালই তো প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদাও ধ্বংস হচ্ছে। একদিকে ধ্বংস হচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য আর বাংলাদেশের কতটা ক্ষতি হচ্ছে, হবে তা বিবেকবান মানুষ সহজেই অনুমান করতে পারেন। সত্যি বলছি এভাবে কর্ণফুলী দূষিত হতে দেখে চোখে জল এসে গিয়েছিল। খুব কান্না পাচ্ছিল। কর্ণফুলী রক্ষার আন্দোলনে আছি কয়েক বছর, সাম্পানে করে কর্ণফুলীর বুকে ছুটতে ছুটতে, কর্ণফুলীর বুকে চড়তে চড়তে, কর্ণফুলীর কথা বলতে বলতে, কর্ণফুলী সম্পর্কে জানতে জানতে কখন যে কর্ণফুলীর প্রেমে পড়েছি নিজেই জানিনা, অবশ্য পরিবেশের প্রতি প্রেম আমার সর্বজনীন, পরিবেশ ঠিক না থাকলে মানব অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে, এটা সবার ভালোভাবে অনুধাবন করা উচিত। যতটা আমরা নিজের প্রতি যত্নশীল ততটা মায়ামমতা দরদ নিয়ে কি পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হই? কিন্তু হওয়া উচিত। উচিত ও দায়িত্বের মধ্যে অনেক বিষয় আছে। কখনো অসচেতনতা, কখনো বা আত্মকেন্দ্রিকতার কারণে আমরা উচিত কাজগুলো ঠিক মতো করি না। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনেও আমাদের অনীহা। প্রকৃতির সন্তান হয়ে প্রকৃতি ধ্বংসের কাজই বেশি করি। অথচ প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা, সৃষ্টির লালন; আশরাফুল মাখলুকাত মানুষের অন্যতম দায়িত্ব। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, নাগরিক, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা জানতেও চাই না। দায়িত্বে অবহেলা, প্রকৃতি ধ্বংস করে ভালো থাকা অত সহজ নয়। কর্ণফুলী রক্ষা করা ফরজ। কর্ণফুলী ধ্বংস হলে, হালদা তো ধ্বংস হবেই বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। অচিরেই মূল্য দিতে হবে সমগ্র জাতিকে। কর্ণফুলী নদী, এটার জীববৈচিত্র্য, মা মাছ, পোনা, বড় মাছ অকাতরে মরছে। প্রশাসন কি করছে?এমনিতেই প্রতিনিয়ত দখলে দূষণে নাব্যতা হারাচ্ছে কর্ণফুলী। নদীর মুখে ভাষা নেই। বোবা কান্নায় প্রাণ হারাচ্ছে প্রিয় কর্ণফুলী। আমরা চেয়ে চেয়ে দেখছি। নিজেদের ক্ষুদ্র সামর্থ্যে কর্ণফুলী রক্ষায় কিছুটা সময় হয়তো দিচ্ছি। কিন্তু রক্ষার জন্য কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়ার সামর্থ্য আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষের নেই। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেও চলছে কর্ণফুলী দখল, দূষণের রাজত্ব। হে কর্ণফুলী, হে প্রকৃতি কখনোই ক্ষমা করোনা বিবেকহীন, দায়িত্বহীন,মায়া মমতাহীন, ভয়ংকর অপরাধী মানব জাতিকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআপনার স্ত্রী, আপনার সফলতার নেপথ্য কারিগর
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে