আন্দোলনের মধ্যে চারুকলা একমাস বন্ধ ঘোষণা

রাতে হল ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে চলবে ক্লাস

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ

সংস্কার কাজের কারণ দেখিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিন দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধকালীন অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া আজাদীকে বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা।

এদিকে, প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে রাত দশটার মধ্যেই ক্যাম্পাস ও হোস্টেল ছাড়ে শিক্ষার্থীরা। তবে হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা গেটেই অবস্থান নিয়েছেন। ইব্রাহিম নামে মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত দশটার মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশনা আমরা গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পেরেছি। কোনো লিখিত নোটিশ পাইনি। আমরা ভেবেছিলাম প্রশাসনের লোকজন আসবেন। এজন্য আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ, হোস্টেলে অনেক জিনিসপত্র আছে। আমরা চাবি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাত দশটায়ও ওনাদের (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের) কেউ আসেননি। প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে হোস্টেল ত্যাগ করার কথা জানিয়ে এই শিক্ষার্থীর দাবি, হোস্টেল ত্যাগ করলেও অনেকের থাকার জায়গা নেই। কোথায় যাবে, তা জানা নেই। তাই হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা এখন হোস্টেলের গেটেই অবস্থান নিয়েছে। এ রিপোর্ট লেখার সময় রাত ১১টার দিকে হোস্টেল গেটে ১০/১৫ জন শিক্ষার্থীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। তবে পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। হোস্টেলে সবমিলিয়ে ২৫ জনের মতো শিক্ষার্থী থাকেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান।

ক্যাম্পাস ত্যাগ করা ও একদফা আন্দোলনের বিষয়ে আন্দোলনরত মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সুসময় বড়ুয়া রাত ১১টায় গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে হোস্টেল ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমরা ইনস্টিটিউটের বাইরে অবস্থান করছি। তবে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎ মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এর পরদিন ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্ত পূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসকল সংগ্রামের প্রেরণার উৎস শহীদ মিনার
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড় কেটে ছড়া ভরাট করলেন ইউপি মেম্বার