করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে পাঁচ মাস পর দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার দশ হাজারের ঘর ছাড়িয়ে গেল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সোয়া ৪১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৮৮৮ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নতুন রোগী পাওয়া গেছে দেশের ৬৪ জেলাতেই। একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১০ আগস্ট, সেদিন ১১ হাজার ১৬৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। খবর বিডিনিউজের।
বুধবার ৯ হাজার ৫০০ জন নতুন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসেবে গত একদিনে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৩৮৮ জন, বা ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, ৬ জানুয়ারি তা হাজার ছাড়ায়, ১৬ জানুয়ারি পেরিয়ে যায় ৫ হাজারের ঘর। এরপর মাত্র চারদিনে তা দ্বিগুণ হল। বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার আরও বেড়ে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়েছে, যা গত বছরের ৫ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। সেদিন শানাক্তের হার ছিল ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
মহামারীর বছর গড়ানোর পর ডেল্টার দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর সংক্রমণের হার কমতে কমতে ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল। নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রভাবে ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে আবার তা বাড়ছে। দৈনিক নমুনা পরীক্ষা বাড়লে এই হার ৪০ শতাংশও হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কারও কারও ধারণা।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৮২ জনে। গত এক দিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় মহামারীতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ১৮০ জনে দাঁড়াল। সরকারি হিসেবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৫৭৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসেবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৭০ হাজার ১৫৭ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ৮৫০ জন। ১০ জানুয়ারি ছিল ১৬ হাজার ৭১৩ জন হয়। অর্থাৎ, মাত্র দশ দিনে সক্রিয় রোগী বেড়ে প্রায় চারগুণ হয়েছে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৭ হাজার ৮৪৩ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭২ শতাংশের বেশি।