‘শ্বাস নিতে পারছে না গাছ/ তার কই নার্সিংহোম/ গাছেরাও তুলছে আওয়াজ/ শুনি তার মৌন মাতম।’ ‘গাছ কাটার অধিকার কে দিল?’ গতকাল রোববার নগরীর শিশুপার্ক এলাকায় কাটা গাছের সামনে ‘হত্যা করা গাছেদের জন্য শোকসভা’য় গাছ নিয়ে ছিল এমন অনুভব আর প্রশ্ন। সাধারণ জনগণের ব্যানারে আয়োজিত হয় এই প্রতিবাদ সভা। এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরকে বৃক্ষশূন্য করা চলবে না। শিশুপার্ক এবং গরিবুল্লাহ শাহ কবরস্থানে গাছ কাটা বন্ধ হোক।
আয়োজকরা জানান, সবুজে ঘেরা চট্টগ্রাম নগরীর সবুজ কমতে কমতে ক্রমশ শ্রীহীন ধূসর নগরীতে পরিণত হয়েছে। মানুষের অসীম চাহিদার কাছে নিরুপায় প্রাণ–প্রকৃতি। এক চিলতে সবুজও রাখা হবে না কোথাও– এমন মরণ পণ করেছে যেন সব প্রতিষ্ঠান। যেখানে গাছ সেখানেই উন্নয়ন পরিকল্পনা। সবকিছু যেন মানুষের করায়ত্ত হওয়া জরুরি।
তারা বলেন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সামনের জায়গাটুকু ছিল উন্মুক্ত, জনসাধারণের হাঁটা–চলা, বিশ্রাম কিংবা অলস সময় কাটানোর সবুজ এক চত্বর। সেটা লিজ দেওয়া হয় সিটি কর্পোরেশনের কাছে। সেখানে হয় শিশুপার্ক। অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার জন্য দীর্ঘ পঁচিশ বছর শেষে লিজ বাতিল করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় শিশুপার্ক। কথা ছিল জায়গাটা আবার আগের মতো উন্মুক্ত থাকবে। কিন্তু সম্প্রতি সেখানকার গাছগুলো কাটা শুরু হয়। ইতোমধ্যে অনেকগুলো গাছ কাটা পড়েছে এবং বাকিগুলোও কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছে। ১২১টার বেশি গাছ এখনও ওই এলাকায় আছে।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, গরিবুল্লাহ শাহ মাজার কবরস্থানে চলছে ‘গাছ হত্যার’ মহোৎসব। বিপ্লব উদ্যানেও গাছ কেটে ইমারত বানানোর কাজ চলছে। এমইএস কলেজের পাশের কবরস্থানের সব গাছ কেটে মরুভূমি বানিয়ে ফেলেছে।
বক্তারা পরিবেশ রক্ষায় গাছের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং আর একটা গাছও কাটা হলে কঠোর আন্দোলনের কথা বলেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঠিক সিদ্ধান্ত এই গাছগুলোকে রক্ষা করতে পারে বলে জানান তারা।
প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাণী গবেষক শফিক হায়দার, ডা. মাহফুজুর রহমান, চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. কামাল উদ্দীন, চলচ্চিত্র নির্মাতা কবি আসমা বীথি, ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক মিতুল দাস, নুরুল হুদা, সিঞ্চন ভৌমিক, বেলা চট্টগ্রামের প্রতিনিধি মনিরা পারভীন রূবা, গণ সংহতির সাধারণ সম্পাদক হাসান মারুফ রুমী, ডা. মনজুরুল করীম বিপ্লব, গ্রিন ফিঙ্গারস–এর কো–ফাউন্ডার আবু সুফিয়ান, রিতু পারভী, অগ্নিবীণা পাঠাগারের সৌরভ চৌধুরী, তোফাজ্জল অভি, হিউম্যান ফার্স্ট মুভমেন্টের তরুণ বিশ্বাস, হামিদ উদ্দিন, সাদিদা সুলতানা, মো. রুবেল, সালমা জাহান, শিরিন শাহিন প্রমুখ।