মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | শনিবার , ৯ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:১১ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবী খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় শনৈ শনৈ বদলে যাচ্ছে এক একটা যুগ। আমরা বাস করছি সবচেয়ে গতিময় সময়ে। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উন্নতি হচ্ছে না আমাদের মানসিকতার। ওল্টো কমছে মনের শান্তি, ভাঙছে পরিবার। ভাই ভাইকে খুন করছে, পিতা পুত্রকে, পুত্র পিতাকে, স্বামী স্ত্রীকে, স্ত্রী স্বামীকে করছে নির্মমভাবে খুন। দিন দিন বাড়ছে আত্মহত্যা। কেন? কারণ মানুষের মন পরিশুদ্ধ না হলে সমাজে এসব অসঙ্গতি-অশান্তি থাকবেই। মানুষের মনের শান্তিই সমাজের শান্তি। জাপান সুইডেন সুইজারল্যান্ডের মানুষের হাতের কাছে আছে বাড়ি-গাড়ি-নারী। আছে সুখের সব আয়োজন। কিন্তু এ সব উন্নত দেশগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি। কারণ শারীরিক সুখের সব আয়োজন থাকলেও মানসিক প্রশান্তির নেই খোরাক। মানুষ তো আত্মারই নাম, দেহ তার বাহন। আত্মার উন্নতি বা শুদ্ধি ব্যতীত মানুষ পশুর ন্যায়। সমাজে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে পরিশুদ্ধ মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ‘তাকওয়া’। তাকওয়া হল আল্লাহ ভীতি। আল্লাহ সবকিছু দেখছেন, সবকিছু রেকর্ড করছেন, একদিন সবকিছুর বিচার হবে, তাই পাপ করা যাবে না- এই চিন্তার নাম তাকওয়া। ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি রোজা অবস্থায় খেতে প্রচণ্ড ইচ্ছে করে কিন্তু আল্লাহর ভয়ে পান করছি না- এটা তাকওয়া। রোজা রেখে ঘুষ গ্রহণ করছি, খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছি- এটি তাকওয়া নয়। খাদ্য ত্যাগ করা প্রতীকী বিষয় আর সমস্ত পাপাচার অন্যায় ত্যাগকে বলে তাকওয়া। এই তাকওয়া অর্জনই রোজার মূল বিষয়। তাকওয়া অবলম্বনকারীকে মুত্তাকি বলা হয়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ওয়াল্লাহু ওয়ালিউল মুত্তাকি অর্থাৎ আল্লাহ মুত্তাকিদের বন্ধু। (সুরা আসিয়া, আয়াত : ১৯)। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ফা ইন্নাল্লাহ ইউহিব্বুল মুত্তাকিন। অর্থাৎ আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকিদের ভালোবাসেন। (সুরা আল ইমরান, আয়াত : ৭৬)। তিনি বলেন, আন্নাল্লাহ মা’আল মুত্তাকিন। অর্থাৎ আল্লাহ অবশ্যই মুত্তাকিদের সাথে আছেন। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৪)। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ইন্নাল্লাহা মা’আস সা’বেরিন। অর্থাৎ আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন।
আল্লাহ পাক বলেননি যে আমি নামাজিদের সাথে আছি, হাজীদের সাথে আছি, যাকাত প্রদানকারীদের সাথে আছি। তিনি কেবল বলেছেন, আমি মুত্তাকি ও সবরকারীদের সাথে আছি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, রোজা সবর শিক্ষা দেয়। রোজার মাধ্যমে অনুশীলন হয় তাকওয়া ও সবরের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপানিতে ডায়রিয়ার জীবাণু নেই : ওয়াসা
পরবর্তী নিবন্ধডোপ টেস্টের সিরিয়াল পেতেই ৬ মাস